নছিমনে চার গরু, জিতলে খাওয়ানো হবে ভোটারদের

পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে নছিমনে চারটি গরু নিয়ে বুধবার বিকেলে মিছিল করেছেন আলতাফ হোসেন নামের এক কাউন্সিলর প্রার্থী। ভোটে জিতলে গরুগুলো জবাই করে ভোটারদের খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে মিছিল করা হয় বলে তাঁর কর্মী-সমর্থকসহ এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

তবে সাংবাদিক পরিচয়ে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে আলতাফ হোসেন বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আসলে আমি গরুর ব্যবসা করি। তাই দু-একজন কর্মী-সমর্থককে বলেছিলাম, জিতলে ষাঁড় জবাই করে খাওয়াব। গরু নিয়ে মিছিলের বিষয়টি সঠিক নয়।’

মিছিলে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাতিগাড়া মহল্লার আলতাফ হোসেন ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় পৌরসভা নির্বাচনে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর প্রতীক উটপাখি। তিনি গরুর ব্যবসা করেন।

ভোটার ও কর্মী-সমর্থকদের আকৃষ্ট করতে আলতাফ হোসেন ঘোষণা দেন জয়ী হলে ভোটারদের গরু জবাই করে খাওয়াবেন। এ জন্য তিনি চারটি গরু কিনেছেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গরুগুলো নছিমনে তুলে ভোটারদের দেখাবেন। এ জন্য বুধবার বিকেলে তিনি কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মিছিলের আয়োজন করেন।

এদিকে এ ঘটনা নিয়ে আলতাফ হোসেনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দেয়। বিকেলে তাঁর মিছিলে প্রচুর মানুষ অংশ নেন। নছিমনে চারটি গরু তুলে নেওয়া হয় এবং গরুগুলোসহ নছিমন নিয়ে আলতাফ হোসেনের নেতৃত্বে মিছিল করা হয়। মিছিলটি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের (হাতিগাড়া ও বড়শিলা মহল্লা) নির্বাচনী এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

আলতাফ হোসেনের নির্বাচনী কার্যালয়ে কথা হয় মিছিলে অংশ নেওয়া হাতিগাড়া মহল্লার রতন হোসেন, খলিলুর রহমান, আবদুল মতিনসহ পাঁচ থেকে ছয়জনের সঙ্গে। তাঁরা জানান, ভোটে জিতলে গরুগুলো খাওয়ানো হবে বলে কাউন্সিলর প্রার্থী আলতাফ হোসেন সবাইকে বলেছেন। এতে সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের পাশাপাশি মিছিলে আলাদা আমেজের সৃষ্টি হয়। এতে প্রচুর মানুষও অংশ নেন। ‘ভোটে না জিতলে কী হবে’ এ প্রশ্ন করা হলে তাঁরা জানান, ‘হারলে কি আর কেউ খাওয়ায়?’

এদিকে এ ঘটনায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ ভোটারসহ গোটা পৌর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বিষয়টিকে মজা হিসেবে দেখছেন। কেউ কেউ বিষয়টিকে আচরণবিধির লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও বেড়া পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তা আচরণবিধির পুরোপুরি লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।