নতুন উপজেলা ঈদগাঁও, উল্লাস ও মিষ্টি বিতরণ
কক্সবাজারের নবম উপজেলা হিসেবে যুক্ত হলো ঈদগাঁও। আজ সোমবার পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নতুন এ উপজেলা অনুমোদন পায়। এ ঘোষণার পরপর ঈদগাঁও বাজারে নেমে পড়ে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। কঠোর বিধিনিষেধের কারণে কাউকে আনন্দ মিছিল করতে দেয়নি পুলিশ। তবে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আজ সোমবার মন্ত্রিপরিষদের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস–সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) ভার্চ্যুয়াল সভায় ঈদগাঁও নতুন উপজেলা হিসেবে অনুমোদন পায়। সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ঈদগাঁও, ইসলামপুর, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ ও পোকখালী নিয়ে এ উপজেলা। বর্তমানে লোকসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার।
এলাকার লোকজন বলেন, ঈদগাঁওকে উপজেলা ঘোষণার জন্য দুই দশক ধরে আন্দোলন–সংগ্রাম করে আসছেন তাঁরা। নির্বাচন এলে ভোটারদের দাবির মুখে পড়তে হয় জনপ্রতিনিধিদের। স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ ঈদগাঁও এলাকার সন্তান।
আজ বিকেল চারটার দিকে ঈদগাঁও বাজারে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার হুমায়ুন কবির চৌধুরী। এ সময় বেশ কিছু মানুষকে বিজয়চিহ্ন প্রদর্শন করে আনন্দ–উল্লাস করতে দেখা গেছে। হুমায়ুন কবির বলেন, বৃহত্তর ঈদগাঁওবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ঈদগাঁওকে উপজেলায় উন্নীত করার। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।
আরেক জায়গায় মিষ্টি বিতরণ করেন জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান। সেখানেও শ খানেক মানুষ আনন্দ–উল্লাস করতে থাকেন। ইমরুল বলেন, ঈদগাঁওবাসীকে প্রশাসনিক কাজকর্মের জন্য ৪০ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজার শহরের উপজেলা পরিষদে যেতে হতো। এখন হয়রানি ও দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে মানুষ। সঙ্গে এলাকার উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জনগণের দাবির মুখে ২০১৯ সালে ২২ জুলাই ঈদগাঁওকে উপজেলায় উন্নীতকরণ–বিষয়ক চূড়ান্ত প্রস্তাবনা (প্রতিবেদন) জেলা প্রশাসক বরাবর দেন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। পরে এই প্রস্তাবনা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তর হয়ে স্থানীয় সরকারের সচিব বরাবর পাঠানো হয়।
ঈদগাঁও উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির মহাসচিব ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ বলেন, ঈদগাঁও উপজেলার সঙ্গে যুক্ত পাঁচটি ইউনিয়নের লাখো মানুষ খুশি।
কক্সবাজার-৩ (রামু-সদর) আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যবিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি ঈদগাঁওকে উপজেলায় উন্নীতকরণে যথেষ্ট চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি।
জেলা প্রশাসন সূত্র আরও জানায়, এর আগে গত ২১ জানুয়ারি ঈদগাঁও থানার উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এটি কক্সবাজারের নবম থানা। ২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস–সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির (নিকার) সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গেজেট প্রকাশ করে ঈদগাঁও থানা গঠন করা হয়। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁও বাসস্টেশনের উত্তরে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের তুলাতলীতে থানা ভবন করা হয়।