নদীকৃত্য দিবসের মানববন্ধনে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি

সমাবেশে অবিলম্বে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দাবি জানানো হয়।আজ সকালে নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে
ছবি: প্রথম আলো

আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষে রাজশাহীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) রাজশাহী জেলা কমিটির আয়োজনে নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

‘পদ্মা নদী বাঁচাও, রাজশাহী বাঁচাও’ স্লোগানে আয়োজিত এ কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন বাপা জেলা কমিটির সভাপতি মো. জামাত খান। তিনি বলেন, গোটা উত্তরাঞ্চলের পাতাল প্রায় পানিশূন্য। সরকারি সংস্থার জরিপেই এই চিত্র উঠে এসেছে। দুই দশক ধরে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানানো হচ্ছে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আজও সেটা আলোর মুখ দেখেনি। অবিলম্বে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানানো হচ্ছে। তা না হলে উত্তরাঞ্চলের মানুষ আমলাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এখন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে চাষিদের সরবরাহ করে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিনিয়ত নিচে নামছে। এই সংকট কাটাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্পের পরিকল্পনা করে।

সমাবেশে এই তথ্য তুলে ধরে জামাত খান বলেন, শুধু রাস্তা আর বিল্ডিং মানে উন্নয়ন নয়; উন্নয়নের পূর্বশর্ত পানি। কিন্তু পদ্মায় পানি নেই। চার বছর পরই ফারাক্কা চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগেই পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করে নতুন চুক্তি করতে হবে। পদ্মায় প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে কৃষিভান্ডার নষ্ট হয়ে যাবে।

বাপার জেলা কমিটির উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান বলেন, ‘রাজশাহী অঞ্চল সব সময় অবহেলিত। কিন্তু আমরা সুষম উন্নয়ন চাই। সরকারকে বলব, এখনো সময় আছে। উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে এ অঞ্চলকে বাঁচান। অন্যথায় এর মূল্য দিতে হবে।’

সমাবেশের অন্য বক্তারা পরিবেশ রক্ষায় রাজশাহী শহরের পুকুর ভরাট বন্ধ করা, যত্রতত্র গাছ কাটা বন্ধ করা এবং পদ্মা নদীকে জাতীয় ড্রেজিং কর্মসূচির আওতায় নিয়ে ড্রেজিং করার দাবি জানান। এসব উদ্যোগ নেওয়া না হলে রাজশাহী অঞ্চলকে বাঁচাতে তাঁরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন।

এ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন, আইনজীবী এন্তাজুল হক, তরুণ সংগঠক গোলাম নবী, নারীনেত্রী সেলিনা হোসেন, সুফিয়া বেগম, বাপার জেলা কমিটির সহসভাপতি শ ম সাজু প্রমুখ।