নবীনগরে ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

আতিকুর রহমান ওরফে সুমন
ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় এক ফার্নিচার ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার ভোর পাঁচটার দিকে শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আতিকুর রহমান ওরফে সুমন (২৮)। আতিকুর মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলিপুর গ্রামের মৃত আবু মিয়ার ছেলে। প্রায় আট বছর ধরে আতিকুর নবীনগরে ভাড়া থেকে ফার্নিচারের দোকান চালাতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আতিকুর উপজেলার বাঘাউড়া গ্রামের বাজারে একটি ফার্নিচার দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ওই দোকানের মালিক প্রবাসে চলে গেলে আতিকুর দোকানটি মালিকের কাছ থেকে কিনে নেন। আতিকুর ও তাঁর দোকানের কর্মচারী সোহেল মিয়া একসঙ্গে ওই গ্রামের আবুল হাসানের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। আতিকুরের লাশ উদ্ধারের পর সোহেল মিয়াকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

সোহেল মিয়ার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, আজ ভোররাতে সাহ্‌রি খাওয়ার পর সোহেল ঘুমাতে যান। এ সময় আতিকুর ফজরের নামাজ আদায়ের জন্য অজু করতে বাড়ির বাইরে যাচ্ছিলেন। এ সময় দরজা খুলতে না খুলতেই কে বা কারা আতিকুরকে গুলি করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

গুলির শব্দ শুনে ঘরের ভেতর থেকে সোহেল ও স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে দৌড়ে গিয়ে আতিকুরকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। সোহেলের চিৎকার শুনে প্রতিবেশী রিনা বেগম, সাইফুল ইসলাম এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের কর্মী মো. হাবিবুল্লাহ ঘটনাস্থলে দৌড়ে আসেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কর্মচারী সোহেল জানিয়েছেন, এটি যে গুলির শব্দ, সেটা সোহেল প্রথমে বুঝতে পারেননি। সোহেলসহ সেখানে উপস্থিত প্রতিবেশীরা মনে করেছিলেন, বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে আতিকুরের বুক থেকে রক্ত ঝরা দেখে তাঁরা বুঝতে পারেন, তাঁকে গুলি করা হয়েছে।

খবর পেয়ে সকালেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সফিকুল ইসলাম ও নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুর রশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির মালিক আবুল হাসান ঢাকায় থাকেন। বাড়িটি একপ্রকার পরিত্যক্ত। ওই বাড়িতে আতিকুর ছাড়া আর একটি পরিবার থাকে। চারপাশে চার ফুট উচ্চতার একটি সীমানাপ্রাচীর আছে। ফজরের নামাজের সময় আতিকুরকে গুলি করা হয়েছে। আতিকুরের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার পরপর এক প্রতিবেশী এক ব্যক্তিকে দেয়াল টপকে পালিয়ে যেতে দেখেছেন বলে জানা গেছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ শুরু করেছি। নারীঘটিত (পরকীয়া) কোনো ঘটনার সঙ্গে আতিকুরের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি। সব বিষয় বিবেচনা করেই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। এসব বিষয়ে অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’