নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ী সেলিম হত্যায় দুইজনের যাবজ্জীবন

নারায়ণগঞ্জ জেলার মানচিত্র

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় ঝুট ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান সেলিম চৌধুরী হত্যা মামলায় দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাবিনা ইয়াসমিন এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন মোহাম্মদ আলী ও মোহাম্মদ ফয়সাল। তাঁরাও ঝুটের (পরিত্যক্ত কাটা কাপড়) ব্যবসা করতেন। রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সেলিম হত্যায় আদালত আসামি মোহাম্মদ আলী ও ফয়সালকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন। একই মামলায় সোলায়মান ও আলী হোসেনকে খালাস প্রদান করেছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ব্যবসায়ী সেলিম চৌধুরী আসামিদের কাছে দুই লাখ টাকা পেতেন। ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ বিকেলে তিনি সেই টাকা আনতে যান মোহাম্মদ আলীর গুদামে। সেখানেই সেলিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন। এরপর মোহাম্মদ আলী, ফয়সাল, সোলয়মানসহ চারজন মিলে সেলিমের হাত-পা বেঁধে বস্তায় ভরে রাখেন। পরে গুদামের ভেতরে একটি গর্ত করে লাশ পুঁতে রাখা হয়।

আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি জাসমিন আহমেদ বলেন, এ ঘটনার ১১ দিনের মাথায় লাশের গন্ধ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহত সেলিম চৌধুরীর স্ত্রী রেহেনা আক্তার বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। মামলাটিতে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন, খালাস পেয়েছেন দুজন।

তবে এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদীসহ নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা। সেলিম চৌধুরীর স্ত্রী ও মামলার বাদী রেহেনা আক্তার বলেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। ঘটনার সময় আমার স্বামীকে পেছন থেকে লোহার রড দিয়ে প্রথমে আঘাত করে। তিনি পরে গেলে তাঁকে জীবিত অবস্থায় মাটিতে পুঁতে রেখে তার ওপর খাট বিছিয়ে আসামিরা ঘুমিয়েছে। আসামি মোহাম্মদ আলী ও ফয়সাল আদালতে ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দিয়েছে। আমি তিন বছর ধরে কতবার আদালতে এসেছি, তার কোনো হিসাব নাই। আদালত আজ যে রায় দিয়েছেন, আমরা তা প্রত্যাশা করিনি। আমরা উচ্চ আদালতে যাব। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।’