‘দুশ্চরিত্র’ বলায় চেয়ারম্যানের ১৪ মাসের কারাদণ্ড

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন ডালবুগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম সিকদার। কলাপাড়া প্রেসক্লাবে
ফাইল ছবি

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সংরক্ষিত নারী আসনের ইউপি সদস্যকে ‘দুশ্চরিত্র’ বলায় ডালবুগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম সিকদারকে ১ বছর ২ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। কলাপাড়া উপজেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক শোভন শাহরিয়ার আজ বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. ফেরদৌস মিয়া রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিনক্ষণ ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল রাত। রাত আটটার দিকে ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুস সালাম সিকদার তাঁর পরিষদের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য ও চাচাতো বোন মোসা. শাহানারা বেগমের বিরুদ্ধে কলাপাড়া প্রেসক্লাবের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি শাহানারা বেগমের বিরুদ্ধে সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ আনেন। যদিও শাহানারা বেগমের দাবি, পারিবারিক জায়গাজমি নিয়ে বিরোধের জেরে এবং চেয়ারম্যানের অনিয়মনের প্রতিবাদ করায় সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন আবদুস সালাম সিকদার।

‘দুশ্চরিত্র নারী’ বলায় ক্ষুব্ধ হয়ে নারী ইউপি সদস্য শাহানারা বেগম ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম সিকদারের বিরুদ্ধে আদালতে ৫০ লাখ টাকার মানহানির মামলা করেছিলেন।

ওই সাংবাদ সম্মেলনেই একপর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর লিখিত বক্তব্যে ওই নারী ইউপি সদস্যকে ‘দুশ্চরিত্র নারী’ বলে আখ্যায়িত করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নারী ইউপি সদস্য শাহানারা বেগম পাঁচ দিন পর ৮ এপ্রিল ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম সিকদারের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকার মানহানির মামলা করেন। উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তিনি।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. গোফরান বিশ্বাস বলেন, বাদীর জবানবন্দিতে সন্তুষ্ট হয়ে বিজ্ঞ আদালত মামলার অভিযোগের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেন। এরপর বিচার বিভাগীয় তদন্তে মামলার বর্ণিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ডালবুগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম সিকদারের বিরুদ্ধে আদালত সমন জারি করেন। সমনের পর ইউপি চেয়ারম্যান আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় স্থানীয় তিনজন সাংবাদিকসহ মোট পাঁচজন সাক্ষ্য দেন।

আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী নাথুরাম ভৌমিক। আজ রায় ঘোষণার সময় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম সিকদার আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।