নালা নির্মাণে সড়কে কোপ

অভিযোগ পেয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাজারমুখী প্রধান সড়কের পাশে নালা নির্মাণ করা হচ্ছে। এ নির্মাণকাজে সড়কের একাধিক স্থানে কেটে ফেলা হয়েছে
প্রথম আলো

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভায় পানিনিষ্কাশনের নালা নির্মাণের জন্য মূল সড়ক কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক থেকে গোয়ালন্দ বাজারগামী প্রধান সড়কের একাধিক স্থানে এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আপাতত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, গোয়ালন্দ শহরের পানিনিষ্কাশনে বিভিন্ন সড়কের পাশে নালা নির্মাণ করা হচ্ছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক থেকে গোয়ালন্দ বাজারগামী প্রধান সড়ক ও বাজারের প্রতিটি সড়কের পাশে নালা নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি প্রশস্ত এবং গড়ে সাত ফুট গভীরতায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সাতটি আরসিসি নালা নির্মাণ করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কাজটি পেয়েছে কেকেআর এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় কয়েকজন সাব–ঠিকাদারির ভিত্তিতে গত এপ্রিল মাসে নালা নির্মাণের কাজ শুরু করে।

গর্ত করতে গিয়ে পাকা সড়ক কাটা পড়ায় তাৎক্ষণিকভাবে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। নকশা মতো কাজ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নজরুল ইসলাম মণ্ডল, মেয়র, গোয়ালন্দ পৌরসভা

গোয়ালন্দ বাজারগামী প্রধান সড়কের প্রস্থ ১৮ ফুট। মূল সড়কের বাইরে ফুটপাতসহ পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি প্রশস্ত করে নালা নির্মাণ করার কথা। তবে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাজারমুখী প্রধান সড়কে খন্দকার আবদুল মুহিত, গোবিন্দ চন্দ্র ও আনোয়ার হোসেনের বাড়ির সামনে প্রায় আড়াই ফুট করে পাকা সড়কের প্রায় ৮০ ফুট লম্বা অংশ অতিরিক্ত কেটে ফেলা হয়েছে।

এ ঘটনার পর গত শনিবার দুপুরে স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুল হক খান। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে সংবাদের সত্যতা পান। এ সময় চার শ্রমিককে আটক করা হয়। পরে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের

ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই দিন পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মণ্ডল খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা শামীম মোল্লা ও আমিনুল ইসলাম বলেন, গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাজারমুখী প্রধান সড়কে প্রায় আড়াই ফুট করে পাকা সড়কের প্রায় ৮০ ফুট লম্বা অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। ব্যস্ততম সড়কটি সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে যানবাহনসহ পথচারীদের চলাচলে আরও সমস্যা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা খন্দকার আবদুল মুহিত বলেন, ‘পৌরসভার প্রয়োজনে আগে প্রায় ছয় ফুট করে জায়গা ছেড়ে দিয়েছিলাম। নতুন করে সড়কের পাশ দিয়ে নালা নির্মাণের জন্য প্রায় ৯ ফুট করে জায়গা ছেড়ে দিয়েছি। আমার অগোচরে ঠিকাদারের লোকজন এক্সকাভেটর চালিয়ে বেশি গর্ত ও পাকা সড়ক কেটে ফেলেছে।’

এ প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি সালাহ উদ্দিন চৌধুরী ও নিরঞ্জন কুমার আগরওয়ালা বলেন, প্রায় ২৫ ফুটের মতো প্রশস্ত করে গর্ত করার সময় কিছু অংশে পাকা সড়ক ধসে পড়েছে। সেখানে দেড়-দুই ফুটের মতো সড়ক কাটা পড়েছে। পৌরসভার মেয়রের নির্দেশে বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে বলে তাঁরা জানান।

পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, ‘গর্ত করতে গিয়ে পাকা সড়ক কাটা পড়ায় তাৎক্ষণিকভাবে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। যথাযথভাবে নির্দেশনা অনুসরণ করে নকশা মতো কাজ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।শহরের দীর্ঘদিনের সমস্যা জলাবদ্ধতা দূর করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। ইতিমধ্যে বাজার এলাকার নালার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।’