নিখোঁজের তিন দিন পর তিস্তা নদী থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

লালমনিরহাট জেলার মানচিত্র

লালমনিরহাট সদর উপজেলায় নিখোঁজের তিন দিন পর এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তিস্তা নদীর পাড় থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত ফরিদা বেগম (৩০) উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের কিসমত চোঙ্গাদ্বারা গ্রামের আবদুস সাত্তারের মেয়ে। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

লাশ উদ্ধারের পর গতকাল রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত গৃহবধূর বাবা আবদুস সাত্তার। মামলায় তিনি আসামি করেছেন তাঁর মেয়ে ফরিদা বেগমের স্বামী দুলাল হোসেন (৪০) ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে মেয়ের নিখোঁজের বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন তিনি।

ফরিদা বেগমের বাবা আবদুস সাত্তার ও মা মনোয়ারা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ছয়-সাত বছর আগে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি বাগডোগরা গ্রামের দুলাল হোসেনের সঙ্গে তাঁদের মেয়ে ফরিদা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে দুলাল হোসেন নানা অজুহাতে স্ত্রী ফরিদা বেগমকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। এ দম্পতির দুটি ছেলে আছে। সন্তানদের কথা ভেবে নির্যাতন সহ্য করেই স্বামীর সংসারে থাকেন ফরিদা। তাঁরা দুজন দাবি করেন, তাঁদের মেয়ে ফরিদাকে নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ তিস্তা নদীতে ফেলে দিয়েছেন স্বামী দুলাল হোসেন ও তাঁর লোকজন।

আবদুস সাত্তার বলেন, ফরিদার স্বামীর বাড়ি এলাকার লোকজনের মাধ্যমে তিনি মঙ্গলবার দুপুরে জানতে পারেন তাঁর মেয়েকে স্বামীর বাড়িতে নির্যাতন করা হয়েছে। সকাল থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর তিনি ওই বাড়িতে গেলে তাঁরা নিখোঁজের কথা স্বীকার করেন, তবে নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেন। আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আমরা সবাই পরিচিত ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও ফরিদার কোনো হদিস পাইনি। এরপর মঙ্গলবার রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।’

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিস্তা সড়ক সেতুর পূর্ব দিকে নদীর পাড়ে স্থানীয় লোকজন একটি লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন। আগে থেকে নিখোঁজের জিডি করা থাকায় তাঁরা আবদুস সাত্তারকে খবর দেন। তিনি এসে লাশটি তাঁর নিখোঁজ মেয়ে ফরিদার বলে শনাক্ত করেন। মামলার তদন্তের পাশাপাশি আসামি গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।