নিখোঁজ এমরানের খোঁজে পরিবারের সবাই চট্টগ্রামে

সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে নিখোঁজ ফায়ার ফাইটার এমরানের স্বজনদের আহাজারি। সোমবার দুপুর পর্যন্ত তাঁর লাশ পাওয়া যায়নি। চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় এমরানের গ্রামের বাড়িতে
ছবি: প্রথম আলো

গত শনিবার রাত আটটা। সর্বশেষ বাড়িতে কথা বলেন সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার লিডার এমরান হোসেন মজুমদার। তখন স্বজনদের জানান, সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে আগুন লেগেছে, নেভাতে যাচ্ছেন। এরপর থেকেই তাঁর মুঠোফোন বন্ধ। সকালে জানা যায়, বিস্ফোরণে এমরান নিহত হয়েছেন। কিন্তু ঘটনার প্রায় ৪৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এমরানের লাশ পাওয়া যায়নি। লাশ খুঁজতে পরিবারের সদস্যরা এখন চট্টগ্রামে আছেন।

এমরানের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সিংআড্ডা গ্রামে। ওই গ্রামের মৃত মকবুল কারির ছেলে এমরান।

আরও পড়ুন

নিহত এমরানের বড় ভাই সোলেমান হোসেন মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, এমরানের মৃত্যুর খবরে তাঁর স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস ও দুই সন্তান তাহসিন মজুমদার ও তোবা মজুমদারসহ পুরো পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। লাশ খুঁজতে তাঁরা বর্তমানে চট্টগ্রামে আছেন।

আরও পড়ুন

সোলেমান হোসেন মজুমদার জানান, শনিবার রাত আটটার দিকে ভাই সর্বশেষ বাড়িতে কথা বলেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, সীতাকুণ্ডে আগুন লেগেছে, নেভাতে যাচ্ছেন। এরপর মধ্যরাত থেকে তাঁর মুঠোফোন। সকালে জানতে পারেন, ভাই অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে তাঁর দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘ভাইয়ের এমন মৃত্যু সইতে পারছেন না পরিবারের কেউ। আমরা সবাই এমরানের খোঁজে এখন চট্টগ্রামে অবস্থান করছি। আমাদের একটাই দাবি, আমরা এমরানের লাশ ফিরে পেতে চাই। এ জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

আরও পড়ুন
এমরান হোসেন মজুমদার
ছবি: সংগৃহীত

এমরানের প্রতিবেশী শাহিনুর আক্তার ও সুমাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, এমরানের স্ত্রী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এমরানের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। দিশাহারা সন্তানদের আহাজারি থামছেই না।

আরও পড়ুন

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এমরান ২০০১ সালে ফায়ার ফাইটার হিসেবে ফায়ার সার্ভিসে যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে ফায়ার লিডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত নিখোঁজ এমরানের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে ফায়ার সার্ভিস এমরানের লাশের সন্ধানে চেষ্টা চালাচ্ছে।

চাঁদপুর ও কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের সাবেক কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, এমরান সৎ, সাহসী ও কর্মঠ লিডার ছিলেন। সেটা তিনি আগেও প্রমাণ করেছেন, এ কাজের মাধ্যমে আবারও প্রমাণ করলেন।

চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা শাহিদুল রহমান বলেন, সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের ঘটনায় এমরান নিহত হয়েছেন, সেটা নিশ্চিত হয়েছেন। তাঁর পরিবারের খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

আরও পড়ুন