নির্ধারিত সময়ে হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ শেষ হচ্ছে না
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কোনো প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে না। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর শুরু হওয়া বেড়িবাঁধের নির্মাণকাজ আজ সোমবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। সময়মতো বিল না পাওয়ায় ধীরগতিতে কাজ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প–সংশ্লিষ্টরা। এদিকে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ সময়মতো শেষ না হওয়ায় বোরো জমি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা।
উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, এবার জগন্নাথপুরের ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের জন্য ২৮টি প্রকল্পে কাজ চলছে। এ কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব কটি প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল।
নলুয়ার হাওর ঘুরে দেখা গেছে, ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এখন মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে কাজ করছেন। বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ প্রকল্পের সভাপতি আহমদ আলী বলেন, সময়মতো প্রকল্পের টাকা পাননি। তাই ধারদেনা করে কাজ করতে হচ্ছে। তাই কিছুটা ধীরগতিতে কাজ হচ্ছে। তবে কয়েক দিনের মধ্যে মাটির কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।
আরেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সুজাত মিয়া বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ৩ কিস্তিতে ৭৫ শতাংশ বিল পাওয়ার কথা। তবে এখনো অনেকে দুই কিস্তি বিল পাননি। দুই কিস্তিতে ৪০ শতাংশ বিল এসেছে।
নির্ধারিত সময়ে বেড়িবাঁধের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় আগাম বন্যায় ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। নলুয়ার হাওরের দাসনোওয়াগাঁও গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্মল দাশ তিনি বলেন, নলুয়ার হাওরটি জেলার বড় হাওর। আগাম বন্যা হলে এ হাওরের ফসল ঝুঁকিতে থাকে। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ে কোনো বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় কৃষকেরা বড় ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো প্রকল্পেরই কাজ শেষ না হওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। যতটুকু কাজ হয়েছে, সেটাও দায়সারাভাবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ না করলে আন্দোলনে যাওয়া হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা পাউবোর মাঠ কর্মকর্তা ও ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ-সংস্কার তদারক কমিটির সদস্যসচিব হাসান গাজী বলেন, ৮৪ শতাংশ মাটির কাজ শেষ হয়েছে। আনুষঙ্গিক কাজ, ড্রেসিং ও ঘাস লাগানো শুরু হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।