নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ কালকিনির ইউএনও-ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ

কালকিনির ইউএনও) মো. জাকির হোসেন ও কালকিনি থানার ওসি ইসতিয়াক আশফাক
ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন ও কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসতিয়াক আশফাককে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ রোববার ইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

১৭ মে পূর্ব এনায়েতনগর ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহাবুব আলমের কর্মী-সমর্থকদের হামলার শিকার হন নেয়ামুল আকন। একই সময় দায়িত্বরত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দীপক বিশ্বাসকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা হয়। এ কারণে ওই দিনই নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামানের পাঠানোর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনে প্রাপ্ত তথ্য, দলিলাদি ও পর্যাবেক্ষণ পর্যালোচনা করে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন ১৯৯১–এর ৩২৭–এর ধারা (৪) ও স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০–এর বিধি (৩) অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে উপযুক্ত কর্মকর্তা পদায়নের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় ব্যর্থ ও সরকারি দায়িত্ব অবহেলার দায় এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রশাসনিক কারণে কালকিনি থানার ওসিকে প্রত্যাহার করে উপযুক্ত কর্মকর্তা পদায়নের জন্য নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।

স্থগিত নির্বাচন ১৫ জুন

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদে সাধারণ নির্বাচন যে পর্যায় থেকে স্থগিত করা হয়েছিল, সে পর্যায় থেকে নতুন তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী ২৩ মে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন, যাচাই-বাছাই ২৪ মে, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২৯ মে, প্রতীক বরাদ্দ ৩০ মে এবং ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৫ জুন।

আ.লীগ প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নেয়ামুল আকনকে মনোনয়নপত্র দাখিলে বাধা দেওয়া, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহাবুব আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন

আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কালকিনি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দীপক বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করার সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি জন্য মাহাবুব আলমের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এ মর্মে কারণ দর্শানোর জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। তাঁর কাছে কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হয়েছে। প্রার্থী তাঁর লিখিত বক্তব্য নির্বাচন কমিশনে পাঠাবেন। তিনি আরও বলেন, এ নির্বাচন ঘিরে নতুন সময়সূচি গণবিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

এদিকে ইউএনও এবং ওসির প্রত্যাহারের নির্দেশের বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পাননি বলে জানিয়েছেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন ও পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা। তাঁরা দুজনই প্রথম আলোকে বলেন, প্রত্যাহারের বিষয় তাঁরা কোনো দাপ্তরিক নির্দেশ পাননি। এ বিষয় তাঁরা আপাতত কিছুই জানেন না।