নির্বাচন করায় বিএনপির দুজন বহিষ্কার হলেও কমিটিতে আছেন ৭ প্রার্থী

বিএনপির লোগো

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় মো. মনিরুল হক সাক্কু ও মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সারকে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দল। একই সঙ্গে এই দুই প্রার্থীর সঙ্গে দলীয় নেতা–কর্মীদের কোনো ধরনের যোগাযোগ করতে বারণ করা হয়েছে।

তবে এর উল্টো চিত্রও আছে। কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন এমন সাতজনকে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে পদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে আছেন এমন ব্যক্তিরাও পদ পেয়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কুমিল্লা মহানগর বিএনপির ৪৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন। এতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল্লাহ আল মোমেনকে সদস্য, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মো. সাখাওয়াত উল্লাহকে সদস্য, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সেলিম খানকে যুগ্ম আহ্বায়ক, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হারুনুর রশিদকে সদস্য, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী শাহ আলম মজুমদারকে যুগ্ম আহবায়ক, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী নাছিরউদ্দিনকে সদস্য ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী কোহিনুর আক্তারকে সদস্য রাখা হয়েছে।

সাত কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাষ্য, তাঁরা কমিটির কথা শুনেছেন। তাঁরা বর্তমানে নির্বাচনী প্রচারে মাঠে আছেন। এদিকে ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী (ঋণখেলাপির কারণে প্রার্থিতা বাতিল হয়, প্রার্থিতা ফিরে পেতে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন) মো. বিল্লালকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের প্রচারে থাকা মনিরুল ইসলামকে সদস্য ও আতাউর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. মনিরুল হকের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়া নজরুল হক ভূঁইয়াকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য রাখা হয়েছে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী তাহমিনা আক্তার প্রচারের অংশ নেওয়া তাঁর চাচা ছিদ্দিকুর রহমানকে মহানগর কমিটির সদস্য রাখা হয়েছে।

নজরুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি মেয়র প্রার্থী মনিরুল হকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে আছি। সোমবার রাতে আমার নাম কমিটিতে দেখতে পেয়ে পদত্যাগ করেছি। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পদত্যাগ নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছি।’

বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অন্তত পাঁচজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রকাশ্যে দলের নেতা–কর্মীদের বেশির ভাগই নির্বাচনী মাঠে নেই। কিন্তু ভেতরে ভেতরে সবাই দল থেকে বহিষ্কার হওয়া দুই মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলের এ সিদ্ধান্ত মানা কঠিন। কাউন্সিলর প্রার্থীরা এই দুই মেয়র প্রার্থীর পক্ষেই আছেন।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগীয়) মোস্তাক মিয়া বলেন, বিএনপি এই সরকারের আমলে কোনো নির্বাচনে যাবে না। এ কারণে মেয়র প্রার্থীদের আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু কাউন্সিলর প্রার্থীরা এলাকার মানুষের চাপে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁদের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা পাননি। প্রার্থীদের সঙ্গে যাঁরা প্রচারে অংশ নেন, তাঁদের বিষয়টি দল দেখবে। তাঁরা প্রার্থী হওয়ার পর দল কমিটি ঘোষণা করেছে।

১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।