নিহত ফায়ারম্যান রানার দাফন সম্পন্ন

ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রানা মিয়ার দাফনের আগে কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। আজ সোমবার সকালে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার নবগ্রাম খেলার মাঠেছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রানা মিয়া (২২) নিহত হন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে রানার লাশ গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার নবগ্রামে আনা হয়। এ সময় এক হৃদয়বিদারক মুহূর্তের অবতারণা হয়। সন্তানের লাশ দেখার পর বাবা পান্নু মিয়া ও মা রেণু বেগমের বিলাপ আর আহাজারিতে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি স্বজন ও এলাকাবাসী।

রানা সীতাকুণ্ডের কুমিরা ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পান্নু মিয়া ও রেণু বেগম দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় মেয়ে বন্যা আক্তারের বিয়ে হয়েছে। রানা মেজো। সবার ছোট সাজেদুল মিয়া। রানার দাদার বাড়ি শিবালয়ের তেওতা এলাকায়। অসচ্ছলতার কারণে রানার পরিবার নানাবাড়ি নবগ্রামে চলে আসে।

আরও পড়ুন

২০২০ সালে ফায়ার স্টেশনে ফায়ারম্যান পদে রানার চাকরি হয়। ওই বছরের ২৪ নভেম্বর সীতাকুণ্ডের কুমিরা ফায়ার স্টেশনে যোগদান করেন। সম্প্রতি ছুটি নিয়ে তিনি শিবালয়ে নবগ্রাম গ্রামের বাড়িতে আসেন। গত বৃহস্পতিবার ছুটি কাটিয়ে তিনি কর্মস্থলে ফিরে যান।

সকাল সাড়ে আটটার দিকে নবগ্রাম খেলার মাঠে জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে রানার মরদেহ দাফন করা হয়।

নিহত রানার ভগ্নিপতি রাসেল শেখ জানান, সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের মধ্যে তাঁর শ্যালক রানাও ছিলেন। গতকাল রোববার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে শ্যালকের খোঁজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তাঁর শ্যালকের লাশ শনাক্ত করেন।

আরও পড়ুন

রাসেল শেখ বলেন, রানার শরীর ও পোশাক পুড়ে যায়। তবে ফায়ার সার্ভিসের পোশাকের নিচে তিনি এলাকার একটি ক্লাবের লেখাসংবলিত টি-শার্ট দেখে তাঁর শ্যালকের লাশ শনাক্ত করেন।

আজ সকালে রানার লাশ নেওয়া হয় নবগ্রাম গ্রামের খেলার মাঠে। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুর রহমান ও মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে রানার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর সকাল সাড়ে আটটার দিকে ওই মাঠে জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে রানার মরদেহ দাফন করা হয়।

আরও পড়ুন

মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, আগুনের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে ফায়ারম্যান রানা প্রাণ দিলেন। শুধু তিনিই নন, তাঁদের আরও অনেক সদস্য নিহত ও আহত হয়েছেন। নিহত রানার পরিবারের পাশে তাঁরা থাকবেন।

আরও পড়ুন