নেতা-কর্মীদের কষ্টের হিসাব পাই পাই করে নেওয়া হবে: মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ছবি: প্রথম আলো

বর্তমান সরকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের যে কষ্ট-যন্ত্রণা দিয়েছে, তার প্রতিটির হিসাব নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সে জন্য এই সরকারকে বিতাড়িত করতে গণ-অভ্যুত্থান গড়ে তুলতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সময়টা খুবই খারাপ। ঠাকুরগাঁওকে আমরা শান্তির নিবাস বলতাম। এখানের মানুষ নিশ্চিন্তে থাকতে ভালোবাসে। ২০১৪ সালের আগে এলাকার মানুষ মামলা-মোকদ্দমা দেখেনি। ২০১৪ সালের পর থেকে গ্রেপ্তারের ভয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের প্রচণ্ড শীতের মধ্যে রাতে ধানখেতে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে। গাছে চড়ে রাত কাটাতে হয়েছে। সেই কষ্ট-যন্ত্রণার কথা তাঁরা ভোলেননি। পাই পাই করে প্রতিটির হিসাব নেওয়া হবে।’

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা লড়াই করেছি অনেক। ক্ষতিও হয়েছে অনেক। কিন্তু আমরা দমে যাইনি। আমরা দমব না। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনব। আর এটার একটাই রাস্তা আছে, আন্দোলন, আন্দোলন আর আন্দোলন। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণমানুষকে সম্পৃক্ত করে একটা গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে আমরা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।’

এই দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কখনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলে জানান বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এই নেতা। সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্য কেনার কার্ড বরাদ্দ নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। ফখরুল বলেন, চাল, ডাল, তেল কেনার জন্য এক কোটি নিম্ন আয়ের মানুষকে টিসিবির কার্ড দেওয়া হয়েছে। জাতীয় পত্রিকা প্রথম আলোতে এসেছে, কার্ড দেওয়া হয়েছে কাকে? মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে। এখন বিধবা কার্ড, বয়স্ক কার্ড, ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড নিতে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকা দিতে হয়। যেদিকে তাকাবেন শুধু দুর্নীতি, দুর্নীতি আর দুনীতি। এ ছাড়া আর কিছু নেই।

মির্জা ফখরুলের ভাষ্য, এই সরকারকে চোর বললেও ভুল করা হবে। এই সরকার এখন পুরোপুরি ডাকাতের সরকার। যেদিকে তাকাবেন শুধু লুটপাট। ১৯৭২ সালেও তারা এই কাজটিই করেছিল।

মন্ত্রীদের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘মন্ত্রীদের বলতে শুনি, বাংলাদেশ এখন রোল মডেল; মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশ যদি মধ্য আয়ের দেশই হবে, রোল মডেলই হবে, তাহলে দারিদ্র্যের সংখ্যা বাড়ছে কেন? কৃষক তাঁর ফসলের ন্যায্যমূল্য পায় না কেন?’

সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ এন এম রোকন উদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিএনপির সহ আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা, জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।