নোয়াখালীতে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা
নোয়াখালী সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মোল্লা ওরফে হারুন মোল্লাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে স্থানীয় পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের চৌকিদারহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পাল্টাপাল্টি হামলায় আহত হয়েছেন হারুনুরের ছেলেসহ দুই পক্ষের পাঁচজন।
নিহত হারুনুর রশিদের (৪৫) পরিবার ও উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এ ঘটনার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দায়ী করা হয়েছে। তবে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিনের (শাহিনের) দাবি, ঘটনাটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। স্থানীয়ভাবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে ঘটনাটি ঘটতে পারে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে কথা হয় হারুনুর রশিদের শ্যালক রুহুল আমিনের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি খবর পান যে তাঁর ভাগনে মো. সজীবকে মারার জন্য একই এলাকার মৃত হোরণের ছেলেরা লোকজন নিয়ে জড়ো হচ্ছেন। খবরটি তিনি শোনার পর ফোনে তাঁর ভগ্নিপতি হারুনুর রশিদকে জানান। তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় গেলে ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী তাঁর ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা হারুনুর রশিদকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। পাশাপাশি তাঁর ভাতিজা রমিজ ও ছেলে সজীবকেও কুপিয়ে আহত করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামলায় হতাহতের ঘটনার পর হারুনুরের পক্ষের লোকজনের হামলায় প্রতিপক্ষের গিয়াস উদ্দিনসহ (৩০) তিনজন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গিয়াস উদ্দিনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে হামলায় নিহত হারুনুরের ভাতিজা রমিজকে (২২) নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর ছেলে সজীবকে (১৮) স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বছরখানেক আগে ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের কর্মী ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হোরণ রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হয়েছিলেন। পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান। ওই ঘটনায় হোরণের পরিবার বিএনপির নেতা হারুনুর রশিদসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের আসামি করে মামলা করে। ওই ঘটনার জেরে আওয়ামী লীগের লোকজন বিএনপি নেতা হারুনুরকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পূর্ববিরোধের জেরে বিএনপির নেতা হারুনুর রশিদ প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলায় খুন হয়েছেন বলে পরিবারের অভিযোগ। তবে হারুনুর ইতিপূর্বে খুন হওয়া হোরণের পরিবারের করা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। তিনি ঘটনার খবর পেয়ে বিস্তারিত জানতে ঘটনাস্থলে রয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।