নোয়াখালীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে গুলি, কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। রোববার বেলা একটার দিকে উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মওদুদ স্কুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওই নেতার নাম মো. শাহজাহান ওরফে সাজু (৩৭)। তিনি বসুরহাট স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য এবং স্থানীয় পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান ওরফে বাদলের অনুসারী। কাদের মির্জার ভাগনে মাহবুবুর রশিদ ওরফে মঞ্জু এ ঘটনার জন্য তাঁর মামার (কাদের মির্জা) অনুসারী মো. শহিদ উল্যাহ ওরফে কেচ্ছা রাশেল ও তাঁর সহযোগীদের দায়ী করেছেন। কাদের মির্জা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার বেলা একটার দিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহজাহান মওদুদ স্কুলের পাশের একটি আসবাবের দোকানে বসেছিলেন। একপর্যায়ে শহিদ উল্যাহর নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একদল সন্ত্রাসী দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে এসে শাহজাহানের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাঁকে এলোপাতাড়ি গুলি করে এবং কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাঁকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মাহবুবুর রশিদ অভিযোগ করেন, ‘মঙ্গলবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে আমাকে ও আমার খালাতো ভাই রাহাতসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যার হুমকি দেন শহিদ উল্যাহ। হুমকির দুই দিনের মাথায় ছাত্রলীগ নেতা নুর করিম ওরফে শাকিলের ওপর এবং পাঁচ দিন পর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহজাহানের ওপর শহিদ উল্যাহর নেতৃত্বে পিচ্চি মাসুদ, জিসানসহ একদল সন্ত্রাসী হামলা চালায়।’

মাহবুবুর রশিদ অভিযোগ করেন, শহিদ উল্যাহসহ একদল অস্ত্রধারী বসুরহাট পৌরসভার তৃতীয় তলায় বসবাস করে। তারা সেখান থেকে বের হয়ে একের পর এক অপরাধ করলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। এমনকি ৫ আগস্ট ছাত্রলীগ নেতা নুর করিমের দুই পায়ে গুলির ঘটনার মামলাও পুলিশ এখনো নেয়নি। পুলিশের নীরবতায় শহিদ উল্যাহর বাহিনী দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে বলেও অভিযোগ করেন মাহবুবুর রশিদ।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের মির্জা ঘোষিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, দুপুরে তিনি বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে শুনেছেন গন্ডগোলের কথা। বিস্তারিত জানেন না।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, কোম্পানীগঞ্জ থেকে গুলিবিদ্ধ ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত শাহজাহান নামের এক ব্যক্তিকে দুপুরে হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার শাহজাহানের ওপর হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়, কিন্তু কাউকে পায়নি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।