নৌকাডুবিতে নিখোঁজ রহিমের খোঁজ মেলেনি ১০ দিনেও

বরিশালের হিজলায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ সরাইলের ব্যবসায়ী রহিম মিয়া
ছবি: সংগৃহীত

১০ দিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় অরুয়াইল ইউনিয়নের রানীদিয়া গ্রামের লায়েছ মিয়ার বড় ছেলে রহিম মিয়া (৫০) বরিশালের হিজলা এলাকায় মেঘনা নদীতে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ হয়েছেন। আজ সোমবারও তাঁর কোনো খোঁজ মেলেনি। ২০ আগস্ট নৌকাডুবির ঘটনাটি ঘটে।

রহিম মিয়া নিখোঁজ হওয়ার ৭ দিন পর পুত্রশোকে কাতর তাঁর মা শাফিয়া খাতুন (৬৭) মারা যান। স্ত্রী-পুত্র হারিয়ে নির্বাক হয়েছেন লায়েছ মিয়া (৭৫)। তিনি খাওয়াদাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া স্বামীর শোকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন রহিম মিয়ার স্ত্রী রুমা বেগম (৪০)।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রহিম মিয়া চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার বড়। তিনি বড় নৌকাযোগে পণ্য পরিবহনের ব্যবসা করতেন। তিনি আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার প্রচারণাও চালিয়ে ছিলেন। ২০ আগস্ট তিন সহযোগীসহ রহিম মিয়া ৪৬০ মেট্রিক টন পাথরবোঝাই একটি নৌকা নিয়ে বরিশালের হিজলা এলাকায় পৌঁছান। রাতে মেঘনা নদীর হিজলা এলাকায় রাতযাপনের জন্য নৌকাটি নোঙর করেন। একপর্যায়ে পানির তোড়ে নৌকাটি মেঘনা নাদীতে ডুবে যায়। তিন সহযোগী সাঁতরে পাড়ে উঠতে পারলেও রহিম মিয়া নিখোঁজ হন। তাঁদের নৌকাটিও এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

২০ আগস্ট তিন সহযোগীসহ রহিম মিয়া ৪৬০ মেট্রিক টন পাথরবোঝাই একটি নৌকা নিয়ে বরিশালের হিজলা এলাকায় পৌঁছান। রাতে পানির তোড়ে নৌকাটি মেঘনা নাদীতে ডুবে রহিম মিয়া নিখোঁজ হন।

রহিম মিয়ার ভগ্নিপতি মুখলেছুর রহমান (৫০) প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার পরপর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন টানা তিন দিন নদীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোনো সন্ধান পাননি। ঘটনার ছয় দিন পর আমরা রহিম মিয়ার লাশ উদ্ধারের জন্য ৬০ হাজার টাকায় কয়েকজন ডুবুরি ঠিক করেছিলাম। তাঁরা দিনভর চেষ্টা করে নৌকার অবস্থান চিহ্নিত করতে পারলেও তাঁর কোনো খোঁজ দিতে পারেননি। ডুবুরিদের ধারণা, লাশটি নৌকার কেবিনের মধ্যে আটকা পড়ে আছে। নৌকাটি বর্তমানে ৩০-৪০ ফুট পানির নিচে। সেখানে পানির তোড়ও খুব বেশি।’

মুখলেছুর রহমান বলেন, ‘বড় ছেলে নিখোঁজের শোক আমার শাশুড়ি সইতে না পেরে মারা গেছেন। এখন স্ত্রী-সন্তানের শোকে আমার শ্বশুরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঠিকভাবে খানাপিনা করছেন না।’

হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসীম কুমার সিকদার ঘটনার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে থানা-পুলিশ, নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল অনেক তল্লাশি করেছে। নৌকাটির খোঁজ পেলেও নিখোঁজ ব্যক্তির কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। তবে আমরা এখনো তৎপর।’