নড়াইলের মির্জাপুর কলেজে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র ও জনতার সংঘর্ষ

নড়াইল জেলার মানচিত্র

নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র ও স্থানীয় জনতার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে শিক্ষক-ছাত্র, স্থানীয় বাসিন্দাসহ এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ ও দুজন শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছেন ছাত্র ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

আজ শনিবার বিকেলে কলেজ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে প্রণাম জানিয়ে কলেজের এক ছাত্র ফেসবুকে পোস্ট দেয়। এ ঘটনায় কলেজের কয়েকজন ছাত্র অধ্যক্ষের কাছে বিচার দেয়। এরপর গুজব ছড়িয়ে পড়ে, অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এতে ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তখন স্থানীয় বাসিন্দারাও কলেজে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান।

এ বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। কলেজের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, অধ্যক্ষবিরোধী কিছু লোক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়েছেন। এতেই উত্তেজনা দেখা দেয়।

নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শওকত কবীর বলেন, অধ্যক্ষ ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন, এমন গুজব ছড়ানোর কারণে উত্তেজনা তৈরি হয়। অধ্যক্ষের বিপক্ষের লোকেরা এসব গুজব ছড়িয়েছেন।

কলেজের শিক্ষক, ছাত্র ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় গতকাল শুক্রবার রাতে ফেসবুকে নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে মন্তব্য করে, ‘প্রণাম নিও বস নূপুর শর্মা, জয় শ্রী রাম।’ আজ সকালে রাহুল কলেজে এলে ছাত্ররা তাঁকে ফেসবুকের পোস্টটি মুছে দিতে বলে। সে পোস্টটি না মুছতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের কাছে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় কয়েকজন মুসলিম ছাত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধ্যক্ষ পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে কলেজ থেকে রাহুলকে নিয়ে যেতে চাইলে ছাত্ররা বাধা দেয়। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারাও কলেজে জড়ো হন। তখন সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ সময় পুলিশ রাহুলকে আবারও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এতে ছাত্র ও স্থানীয় লোকজন আবারও বাধা দেন। একপর্যায়ে বিকেল চারটার দিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান তাঁরা। পরে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এরপর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় ঘটনাস্থলে গিয়ে বিচারের আশ্বাস দিয়ে রাহুল ও অধ্যক্ষকে থানা-হেফাজতে নিয়ে আসেন।

আরও পড়ুন

ওসি মোহাম্মদ শওকত কবীর সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, রাহুল ও অধ্যক্ষকে থানা-হেফাজতে আছেন। এক পুলিশ সদস্য আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।