নড়াইলে আবার বাড়তে শুরু করেছে করোনা শনাক্তের সংখ্যা

করোনাভাইরাস।
প্রতীকী ছবি

নড়াইল জেলায় জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এ সময়ে জেলায় অধিকাংশ দিনই সংক্রমণের হার ৩৫ শতাংশের ওপরে ছিল, যা সর্বোচ্চ ৮২ শতাংশ পর্যন্ত ওঠে। মৃত্যুও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে এ সময়ে। তবে ১ থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত এ হার কমতে থাকলেও ৪ জুলাই থেকে আজ মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে আবার বাড়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, ১ জুলাই শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৯২, ২ জুলাই ৭৫, ৩ জুলাই ৩, ৪ জুলাই ১২১, ৫ জুলাই ৭০ এবং আজ মঙ্গলবার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৭৩ জনের।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ১১ জুন থেকে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। ৩০ জুন পর্যন্ত ২০ দিনের মধ্যে ১৫ দিনই সংক্রমণের হার ৩৫ শতাংশের ওপরে ছিল। ২৯ জুন সংক্রমণের হার ছিল ৮২ শতাংশ। এদিন লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলায় সংক্রমণের হার ছিল যথাক্রমে ৯৪ দশমিক ১১ শতাংশ ও ৯৫ দশমিক ২৩ শতাংশ।

গত ১১ থেকে ২০ জুন পর্যন্ত নড়াইল সদর উপজেলায় সংক্রমণের হার বেশি ছিল। উপজেলাটিতে এ সময়ে ২১২ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এ সময়ে লোহাগড়ায় ৭৩ ও কালিয়া উপজেলায় ২৬ জনের শনাক্ত হয়। ২১ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সদর উপজেলায় শনাক্ত কমতে থাকে। এ সময়ে শনাক্ত হন ১৭২ জন।

জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন গত বছরের ৭ এপ্রিল। এ পর্যন্ত (৫ জুলাই) মোট সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ২৯ জনের। এর মধ্যে গত ১১ জুন থেকে গতকাল (৫ জুলাই) পর্যন্ত এই ২৪ দিনে রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৯ জন।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শফিক তমাল বলছেন, ভারত থেকে এপ্রিল-মে মাসে লোকজন আসেন। শুরুতে অল্প থাকলেও জুনের প্রথম সপ্তাহে সংক্রমণ সামাজিক সংক্রমণে রূপ নেয়।

এদিকে জেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫০ জন। এর মধ্যে গত ১৪ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত ২৩ জন মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে সদর ও লোহাগড়া উপজেলায় ৮ জন করে এবং কালিয়া উপজেলায় ৭ জন আছেন।

লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা রিপন কুমার ঘোষ বলেন, পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ৫০-৬০ বছরের ওপরের বয়সী মানুষের মৃত্যু হয়েছে বেশি। তাঁরা অধিকাংশই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ ও কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন।

রিপন কুমার ঘোষ বলেন, রোগীরা হাসপাতালে আসছেন শেষ মুহূর্তে। তখন চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পর্যাপ্ত সময় থাকছে না। উপসর্গ দেখা দিলেও পরীক্ষা করান না অনেকে। আবার শনাক্ত হলেও নিজেরা বাড়িতে থেকে জ্বর-সর্দির ওষুধ খাচ্ছেন।

উপসর্গ দেখা দিলেই হাসপাতালে আসার পরামর্শ দিয়ে রিপন কুমার ঘোষ বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা আছে। উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।