পঞ্চগড়ে ধর্ষণের মামলায় পুলিশের এসআইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আদালত
প্রতীকী ছবি

পঞ্চগড়ে ধর্ষণের মামলায় পুলিশের একজন উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক মো. মেহেদী হাসান তালুকদার এ পরোয়ানা জারি করেন। পুলিশের ওই কর্মকর্তার নাম আবদুল জলিল (৪৫)। বর্তমানে তিনি কুড়িগ্রাম সদর থানায় কর্মরত।

২০২১ সালের ২৫ মার্চ আবদুল জলিলের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন ওই নারী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে প্রথমে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

মামালার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল পঞ্চগড় পৌরসভার পূর্ব জালাসী এলাকার বিধবা এক নারী (৩৭) তাঁর ভাশুরের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সেই জিডির তদন্তের দায়িত্ব পান পঞ্চগড় সদর থানার তৎকালীন এসআই আবদুল জলিল। তদন্ত করতে গিয়ে ওই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তিনি। এরপর ২০২০ সালের ১০ জুন ওই নারীকে আবদুল জলিল ধর্ষণ করেন বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়।

এজাহারে বলা হয়, ওই নারীর পরিবারের লোকজন ধর্ষণের বিষয়টি জানতে পেরে জলিলকে আটক করেন। একই দিন দুই ব্যক্তিকে ডেকে এনে ওই নারীকে বিয়ে করেন আবদুল জলিল। তবে সরকারি চাকরির কারণে বিষয়টি প্রকাশ্যে না আনতে অনুরোধ করেন জলিল। এরপর নানা সময়ে বিয়ের কাবিননামা দেখতে চাইলে সময়ক্ষেপণ করতেন তিনি। সে জন্য পঞ্চগড় জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান ওই নারী। এরপর আবদুল জলিল বদলি হয়ে কুড়িগ্রামে চলে যান। এরপর দুয়েকবার দেখা হলেও ওই নারীকে স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে রাজি হননি জলিল। ভুয়া কাবিনে বিয়ে হয়েছে দাবি করে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে অন্য মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন ওই নারীকে।

আজ রোববার মামলাটির শুনানির সময় পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আজিজার রহমান ও বাদীপক্ষের আইনজীবী মেহেদী হাসান উপস্থিত ছিলেন।

আজিজার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অনুসন্ধানী তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

পরোয়ানা জারির পরপরই অভিযুক্ত এসআই আবদুল জলিলকে আদালত চত্বরে (বাইরে) পুলিশের পোশাকে দেখা গেছে। তবে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। কিছুক্ষণ পর আদালত চত্বর ছেড়ে যান তিনি।