পটুয়াখালীতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ‘হামলায়’ বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড

পটুয়াখালী জেলা শহরে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসুচিতে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কটূক্তির প্রতিবাদে পটুয়াখালীতে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল জেলা বিএনপি। কিন্তু ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলার কারণে ওই কর্মসূচি পণ্ড হয়েছে বলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন। হামলায় অন্তত ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হন।

শহরের বনানী সড়ক এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন

ওই হামলায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুজ্জামান লিটনও আহত হন। এ ছাড়া আটজনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন—জাকির হোসেন, রিমানুল ইসলাম, ফারুক হোসেন, মোকসেদুল, আল আমিন, হাসান, তানভীর ও ফারুক আলম। এর মধ্যে জাকির দুমকি উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও রিমানুল জেলা যুবদলের ভাইস প্রেসিডেন্ট। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভ মিছিল উপলক্ষে সকাল থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা জেলা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমবেত হতে থাকেন। তাঁরা দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে মিছিল করতে থাকেন। বেলা ১১টার দিকে বরিশাল থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার কর্মসূচিতে যোগ দেন। এ সময় নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানাতে থাকেন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে বিএনপির কর্মসূচির দিকে ধাওয়া দেন, মারধর শুরু করেন। বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেন। পণ্ড হয়ে যায় বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি। পরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য এসে দুই পক্ষের মাঝে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব স্নেহাংশু সরকার বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে জেলা বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল আজ। কিন্তু কর্মসূচি চলাকালে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অন্তত ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন জেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সোহেল বলেন, এই হামলায় তাঁদের কেউ জড়িত নন। বিএনপির দলীয় কোন্দলের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। একই কথা বলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আশীষ হৃদয়। তিনি বলেন, জেলা বিএনপির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কোন্দল রয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু হলেই ছাত্রলীগকে দোষারূপ করে।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, আসলে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির মধ্যেই বিরোধ। তাদের দলীয় বিরোধে এই মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এখানে আওয়ামী লীগের কেউ জড়িত ছিল না। তাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে বিক্ষোভস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত।