পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণ মামলায় বিচার শুরু

আদালত
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের আলোচিত পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের মামলায় আসামি নির্মল চন্দ্র আইসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
আজ সোমবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪–এর বিচারক মো. জামিউল হায়দার এ আদেশ দেন।

 ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি নিখিল কুমার নাথ প্রথম আলোকে বলেন, আদালত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন। আসামির জামিনের আবেদন করা হলে তা নাকচ করে দেন আদালত।

ধর্ষণের দায় নিহত এক ব্যক্তির ওপর চাপিয়ে আসামিকে বাদ দিয়ে ডিবি পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে গত ৭ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নিয়েছেন আদালত। ধর্ষণের ঘটনাটি ২০২০ সালের ৪ মের। পাঁচ বছরের কন্যাশিশুটির শারীরিক পরীক্ষা শেষে চিকিৎসকেরা প্রতিবেদন দিয়েছেন শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

সেদিন নগরের আকবর শাহ থানা এলাকায় খেলতে বের হয়েছিল শিশুটি। তাকে পরোটা খাওয়ানোর কথা বলে ধর্ষণ করা হয়। বিষয়টি ওই শিশু বলার পর স্থানীয় লোকজন নির্মল চন্দ্র আইস নামের স্থানীয় ওই ব্যক্তিকে ধরে পুলিশে দেন। দুই দিন পর শিশুটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেয়। সেখানেও ওই ব্যক্তিকে ইঙ্গিত করে। পরে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় ওই ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন।

তদন্ত শেষে আকবর শাহ থানা–পুলিশ ওই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। সেখানে বলা হয় ওই বছরের ২২ জুলাই নগরের বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন অটোরিকশাচালক বেলাল হোসেন। তিনি ক্রমিক ধর্ষক হিসেবে পরিচিত। মারা যাওয়ায় শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনায় তাঁকে আসামি করতে পারেনি পুলিশ।

ঘটনার শুরু থেকে শিশুটির পরিবারকে আইনি সহায়তা দিয়ে আসছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ)। পুলিশের দেওয়া এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে সংগঠনটির সহায়তায় আদালতে নারাজি আবেদন করেন শিশুটির বাবা। আদালত ডিবি পুলিশকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু গত বছরের ২৩ নভেম্বর ডিবি পুলিশও আকবর শাহ থানা–পুলিশের মতো এই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। বাদী আবারও আদালতে নারাজি আবেদন করেন। আদালত ডিবি পুলিশের প্রতিবেদনটি গ্রহণ না করে মামলার এজাহারে থাকা আসামির বিরুদ্ধে সরাসরি অপরাধ আমলে নেন।

বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি আইনজীবী জিয়া হাবিব আহসান প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটির দরিদ্র পরিবারকে মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।

২০২০ সালের ২২ অক্টোবর প্রথম আলোয় এ নিয়ে ‘নিহতের ওপর দায় চাপিয়ে আসামিকে বাদ দিল পুলিশ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।