পাটুরিয়ায় নদী পারের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের গরমে দুর্ভোগ

গরমে স্বস্তি পেতে বাস থেকে নেমে সড়কের পাশের দোকানে জিরিয়ে নিচ্ছেন যাত্রীরা
ছবি: প্রথম আলো

ঈদকে সামনে রেখে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। তবে প্রচণ্ড গরমে নদী পার হওয়ার অপেক্ষায় থাকা বাসযাত্রীদের এখন হাঁসফাঁস অবস্থা। গরম থেকে স্বস্তি পেতে যাত্রীদের কেউ কেউ বাস থেকে নেমে গাছের ছায়ায় জিরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ টিউবওয়েলের পানিতে হাত-মুখ ও মাথা ধুয়ে নিচ্ছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে ৩ নম্বর ঘাটের কাছে টিউবওয়েলে হাত-মুখ ভিজিয়ে নিচ্ছিলেন ইলিয়াস হোসেন (৩৫)। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি। ছোট ভাইকে নিয়ে ঈদের ছুটিতে ইলিয়াস গ্রামের বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার আবালপুরে যাচ্ছেন। ইলিয়াস বলেন, ‘দুই ঘণ্টা আগে থেকে ঘাটে আটকে আছি। প্রচণ্ড গরমে খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাই ঠান্ডা পানিতে হাত-মুখ, মাথা ভিজালাম। এখন কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি।’

২ নম্বর ঘাটে আজ পন্টুন স্থাপন করা হলেও দুপুর পর্যন্ত এ ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার শুরু হয়নি। বাকি চারটি ঘাটের মধ্যে ৩ ও ৪ নম্বর ঘাটে যাত্রীবাহী বাস, ৫ নম্বর ঘাটে ব্যক্তিগত গাড়ি ও ছোট গাড়ি এবং ১ নম্বর ঘাটে মালবাহী গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে আজ সকাল থেকে পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রীবাহী বাসের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। বেলা ১১টা পর্যন্ত ঘাট এলাকা থেকে পাটুরিয়া-উথলী সংযোগ সড়কের আরসিএল মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাসের সারি দেখা গেছে। এর আগে ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘাট এলাকায় ব্যক্তিগত বিভিন্ন ছোট গাড়ির চাপ ছিল। এ সময় দুই শতাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি ঘাটে আটকা পড়ে। তবে ১০টার পর থেকে ছোট গাড়ির চাপ কিছুটা কমেছে বলে জানা গেছে।

পাঁচ নম্বর ঘাট এলাকায় দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘাট এলাকায় যানজট ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে ছোট গাড়িগুলোকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের টেপড়া থেকে নালী সড়ক হয়ে পাটুরিয়া পাঁচ নম্বর ঘাটে পাঠানো হচ্ছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অর্ধশত ব্যক্তিগত গাড়ি নদী পারের অপেক্ষায় ছিল।

ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘাট এলাকায় ব্যক্তিগত বিভিন্ন ছোট গাড়ির চাপ ছিল
ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল থেকে সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছুটি শুরু হওয়ায় এ নৌপথে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ আরও বাড়বে। আজ দুপুর পর্যন্ত ২০টি ফেরির মধ্যে ১৯টি ফেরি চালু রয়েছে। তবে একটি ফেরির যান্ত্রিক ত্রুটি থাকায় ওই ফেরি পাটুরিয়ায় ভাসমান কারখানায় মেরামত করা হচ্ছে।

এ ছাড়া পাটুরিয়ার পাঁচটি ঘাটের সব কটি সচল রয়েছে। ২ নম্বর ঘাটে আজ পন্টুন স্থাপন করা হলেও দুপুর পর্যন্ত এ ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার শুরু হয়নি। বাকি চারটি ঘাটের মধ্যে ৩ ও ৪ নম্বর ঘাটে যাত্রীবাহী বাস, ৫ নম্বর ঘাটে ব্যক্তিগত গাড়ি ও ছোট গাড়ি এবং ১ নম্বর ঘাটে মালবাহী গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, গত দুই বছর করোনার বিধিনিষেধ থাকায় এবার ঈদে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় নৌপথে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়বে। যানবাহনের এই বাড়তি চাপ সামাল দিতে ও যাত্রীদের নির্বিঘ্নে পারাপার করতে এ নৌপথে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।