ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে মোটরসাইকেলের মালিকদের মধ্যে আবার চুরির আতঙ্ক শুরু হয়েছে। চোরের চক্রটি আবার এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আড়াই-তিন মাস বন্ধ থাকার পর আবার মোটরসাইকেল চুরি শুরু হয়েছে পীরগঞ্জে। উপজেলায় গত সাত দিনে তিনটি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে আলহাসনাহ স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাসেদুল ইসলামের ঘরের গ্রিল কেটে তাঁর ১৫০ সিসি বাজাজ ডিসকাভার মোটরসাইকেল চুরি হয়। গত সোমবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা কৃষ্ণ চন্দ্র রায়ের বাজাজ পালসার ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল হাসপাতাল চত্বর থেকে চুরি হয়। এর আগে গত শনিবার বিকেলে কালপির চৌরাস্তার কাছ থেকে কাহারোল উপজেলার শিক্ষক ওবায়দুর রহমানের ডিসকাভার মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে।
চিকিৎসক কৃষ্ণ চন্দ্র রায় বলেন, ‘দুপুরে হাসপাতাল চত্বর থেকে আমার মোটরসাইকেলটি চুরি হয়ে গেল। আমি তো অবাক। তা পাওয়ার আশায় বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখনো মামলা করিনি।’
আড়াই-তিন মাস বন্ধ থাকার পর আবার মোটরসাইকেল চুরি শুরু হয়েছে পীরগঞ্জে।
ভুক্তভোগীরাসহ এলাকাবাসী জানান, তিন বছর ধরে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলাসহ আশপাশ উপজেলায় ব্যাপক হারে মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছিল। চোরেরা মোটরসাইকেল চুরি করে মালিককে ফোন দিয়ে তাঁর কাছ থেকে ৫০-৭০ হাজার করে টাকা আদায় করে মালিককে তা ফেরত দিত। মোটরসাইকেল ফিরে পেয়ে সেই মালিক এ বিষয়ে কোথাও কোনো অভিযোগ করতেন না। চলতি বছরের মে মাসের আগপর্যন্ত ব্যাপকভাবে চলে আসছিল এলাকায় এ চুরি।
এর আগে মোটরসাইকেল চুরির কাজে জড়িত অভিযোগে রানীশংকৈল পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুর রাজ্জাক গ্রেপ্তার হন। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, কাউন্সিলর আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে তাঁর বাহিনী এলাকায় এত দিন মোটরসাইকেল চুরি করত। রাজ্জাক এ বছর রানীশংকৈল পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।
হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আওরঙ্গজেব বলেন, রানীশংকৈল পৌরসভার বর্তমান কাউন্সিলর আবদুর রাজ্জাককে জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন চুরির ২১টি মামলা রয়েছে। পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর মানুষের মধ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে দুশ্চিন্তা কমে গিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি পীরগঞ্জে আবার শুরু হয়েছে চুরি। এ কারণে মালিকদের মধ্যে আবার শুরু হয়েছে চুরির আতঙ্ক।
জানতে চাইলে পীরগঞ্জ থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় বলেন, ‘মোটরসাইকেল চুরির খবর শুনেছি। তবে কোনো মালিক থানায় মামলা করেননি। আর যেন চুরি না হয়, সে জন্য সিসি ক্যামেরা, আউটসোর্সিং ও জামিন পাওয়া আসামিদের ওপর কড়া নজর রাখছি।’