পীরগঞ্জে হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনায় আরও ১১ জন গ্রেপ্তার

দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে বাড়ি–ঘর পুড়ে গেছে। পোড়া ঘরের টিন সরাচ্ছেন এক নারী। পীরগঞ্জ উপজেলার বড় করিমপুরে
ফাইল ছবি

রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু পাড়ায় হামলার আগে জনতাকে উত্তেজিত করার অভিযোগে দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই দুজনের বিরুদ্ধে নতুন করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া বাড়িঘরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের মামলায় আরও ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে ওই ঘটনায় ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দুজন হলেন মাঝিপাড়া বড়করিমপুর এলাকার পাশের বড় মজিদপুর গ্রামের উজ্জ্বল হাসান (২১)। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি বেঙ্গল দরজি প্রশিক্ষণ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে সেলাই প্রশিক্ষণ দেন। অন্যজন পীরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কিশোরগাড়ি গ্রামের আল আমিন (২২)।

এ সম্পর্কে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুজনকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই দুজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আজ বুধবার আরও একটি নতুন মামলা হয়েছে। নতুন এই মামলার বাদী হলেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাদ্দাম হোসেন। একই সঙ্গে তাঁরা হিন্দু বাড়িঘরে হামলা–ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পৃথক মামলারও আসামি।

ওসি আরও বলেন, ঘটনার ৪০ দিন আগে ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা নিয়ে উজ্জ্বল হাসানের সঙ্গে মাঝিপাড়া এলাকার পরিতোষ সরকারের ফেসবুকে তর্কবিতর্ক হয়। পরিতোষকে শায়েস্তা করার জন্য তাঁর দেওয়া আপত্তিকর পোস্ট স্ক্রিনশট নিয়ে বিভিন্নজনের কাছে পাঠান উজ্জ্বল হাসান। এতে লোকজন সংগঠিত হতে থাকে। উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা ও সহিংস ঘটনার সৃষ্টি হয়।

ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত রোববার রাতে পীরগঞ্জে রামনাথপুর ইউনিয়নে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা তিনটি মামলায় ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

পীরগঞ্জ থানা-পুলিশ জানায়, তিনটি মামলার মধ্যে দুটি মামলার বাদী হলেন পীরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইসমাইল হোসেন। এর মধ্যে একটি মামলা হয়েছে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনায়। নতুন ১১ জন গ্রেপ্তারসহ এ মামলায় আসামি হলো ৫২ জন।

অন্য দুটি মামলা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। এ দুটি মামলার মধ্যে একটি মামলার আসামি ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযুক্ত পরিতোষ সরকার (১৯)। অন্যটিও হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিয়ে মানুষজনকে উত্তেজিত করার অভিযুক্ত দুজন আসামি হলেন উজ্জ্বল হাসান ও আল আমিন।