‘পুলিশকে একদিকে ব্যস্ত রেখে হামলা চালায় সাতটি গ্রুপ’

প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলছেন পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে হিন্দুদের মন্দির, পূজামণ্ডপ, দোকানপাট, বাসাবাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম। হামলা-ভাঙচুরের মামলায় ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার আরও ১৩ জনকে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে হাজির করা হয়।

শনিবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লার ঘটনাকে ইস্যু করে বাঙালি হিন্দুদের শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসবের শেষ দিনে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী হামলাকারীদের একটি গ্রুপ চৌমুহনীর ডিবি রোডে (ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়ক) পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি হামলা ও ধাওয়ায় লিপ্ত হয়ে পুলিশকে ব্যস্ত রাখে। অন্য সাতটি গ্রুপ পরিকল্পনা অনুযায়ী বিচ্ছিন্নভাবে ভাগ হয়ে মন্দিরগুলোতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

পুলিশ সুপার বলেন, এ পর্যন্ত পুলিশ বেগমগঞ্জ ও চৌমুহনীর ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। দুই আসামি ইতিমধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের স্বীকারোক্তিতে এ ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। সর্বশেষ শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ভিডিও ফুটেজ ও সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আরও আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে আরও পাঁচজনকে। গ্রেপ্তার আটজনকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেওয়া হবে।

পুলিশ সুপার বলেন, হামলা-ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, প্রায় একই সময়ে সব কটি মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এতে সহজেই বোঝা যায়, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী এ হামলা চালানো হয়েছে। চৌমুহনীতে গত ৫০ বছরে এ ধরনের হামলা কিংবা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার কোনো নজির নেই। কিন্তু সেই ইতিহাস এবার ভঙ্গ হয়েছে।

পুলিশ সুপারের ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ ইমরান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-ডিবি) সাইফুল ইসলাম ও জেলা বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডিআইওয়ান) ফজলে রাব্বী প্রমুখ।

এদিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, নোয়াখালী জেলায় পূজামণ্ডপে, মন্দিরে হামলার ঘটনায় শনিবার পর্যন্ত ২৫টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলার এজাহারনামীয় আসামির সংখ্যা ৪০৯। অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা ৭ হাজার ৫০০। এ পর্যন্ত মোট গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৭৪ জন। এর মধ্যে এজাহারনামীয় ৮৯ ও সন্দেহভাজন ৮৫ জন।