প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে স্ত্রীকে হত্যা, আদালতে স্বামীর স্বীকারোক্তি

হত্যা
প্রতীকী ছবি

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার দুধাইল গ্রামের গৃহবধূ শিপন বেগমকে (৪০) তাঁর স্বামী তোজাম হোসেন নিজেই গলা কেটে হত্যা করেছেন। হত্যার দায় চাপিয়ে প্রতিবেশীর কাছ থেকে জমির দখল নিতে তোজাম হোসেন এই কাজ করেন।

গতকাল রোববার রাতে জয়পুরহাটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুর রহমানের আদালতে তোজাম হোসেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন। কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আদালত ও কালাই থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২৭ মে রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে শিপন বেগম তাঁর নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত রাত তিনটার দিকে তোজাম হোসেন ওই ঘরে ঢুকে শিপন বেগমকে গলা কেটে হত্যা করেন। রাতেই মুঠোফোনে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের জানান, কে বা কারা শিপন বেগমকে হত্যা করেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে পরদিন দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে পাঠায়।

এ ঘটনায় রহস্য উদ্‌ঘাটনে কালাই থানা-পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) টিম তৎপরতা শুরু করে। পুলিশ জানতে পারে, তোজাম হোসেন তাঁর প্রতিবেশী আইনুলের কাছ থেকে ১০ শতক জমি কিনেছিলেন। তবে আইনুল তাঁকে জমি দলিল করে দিচ্ছিলেন না বলে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। পরে পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তোজাম হোসেন, তাঁর ছেলে শিহাব হোসেনসহ পাঁচজনকে আটক করে। এরপর তোজাম হোসেন স্ত্রীকে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। এ ঘটনায় নিহত শিপন বেগমের ভাই বাদী হয়ে কালাই থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় নিহত ব্যক্তির স্বামী ও ছেলেকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে ওসি এস এম মঈনুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তোজাম হোসেনের সঙ্গে তাঁর প্রতিবেশী আইনুলের জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। তোজাম হোসেন তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করে আইনুলের বিরুদ্ধে মামলা করে চাপে ফেলে জমি দলিল করে নিতে চেয়েছিলেন। তোজামের ছেলে শিহাব হোসেন হত্যার আলামত নষ্ট করতে চাকু ধুয়ে ঘরের চালায় রেখেছিলেন।

জয়পুরহাট আদালতের পুলিশ পরির্দশক আবদুল লতিফ খান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে তোজাম হোসেনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।