প্রধানমন্ত্রীর এপিএস পরিচয়ে অর্থ দাবি, মানিকগঞ্জে এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার

অপরাধ
প্রতীতী ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব-২ (এপিএস-২) পরিচয় দিতেন তিনি। দলীয় পদপদবি, দলীয় মনোনয়ন, চাকরিসহ বিভিন্ন সুযোগ ও সুবিধার আশ্বাস দিয়ে তিনি মানুষের কাছ থেকে টাকা দাবি করতেন। শেষমেশ প্রতারণার অভিযোগে আজ শুক্রবার ভোরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা এলাকা থেকে তাঁকে আটক করেছে র‍্যাব-৪।

প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ ভুয়া পরিচয় দানকারী ওই ব্যক্তির নাম রুবেল মিয়া ওরফে শাওন (৩৬)। তিনি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা।

রুবেল মিয়া ১৪ মে মানিকগঞ্জ শহরের গঙ্গাধরপট্টি এলাকার বাসিন্দা জেলা যুব মহিলা লীগের নেত্রী ফরিদা ইয়াসমিনের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ পরিচয় দিয়ে ৫৫ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। বিনিময়ে প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন সামগ্রী দিতে ২১ লাখ টাকার প্রকল্প দেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে তাঁর কথায় সন্দেহ হলে ফরিদা ইয়াসমিন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। প্রতারক রুবেলের আটকের খবর পেয়ে ফরিদা ইয়াসমিন র‌্যাব-৪ মানিকগঞ্জ কার্যালয়ে যান। সেখান থেকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তাঁর সঙ্গে প্রতারণাচেষ্টার ঘটনা জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ গাজী হাফিজুর রহমান পরিচয় দিয়ে রুবেল মিয়া নবগ্রাম ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আরিফুরের কাছে মুঠোফোনে টেলিভিশন দাবি করেন।

একইভাবে রুবেল জেলা যুব মহিলা লীগের নেত্রী সেলিনা আক্তারের কাছে ৫২ হাজার টাকা দাবি করেন। এদিকে ১৪ মে রুবেল মিয়া মুঠোফোনে সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবসায়ী আরিফুর রহমানকে ফোন করেছিলেন। আরিফুর প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ গাজী হাফিজুর রহমান পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাঁর কাছে মুঠোফোনে টেলিভিশন দাবি করেন। পরে বিষয়টি সন্দেহজনক হলে তিনি র‍্যাব-৪–কে বিষয়টি জানান।

র‍্যাব-৪ মানিকগঞ্জ কার্যালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, কয়েক দিন ধরে মানিকগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস-২ পরিচয় দিয়ে রুবেল মিয়া বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ত্রাণ দেওয়া, আগামী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীক এবং জেলা পর্যায়ে দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে আসছিলেন। এ অভিযোগে শুক্রবার ভোররাত চারটার দিকে অভিযান চালিয়ে জেলা সদরের বেতিলা এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

র‍্যাব হেফাজতে আটক থাকায় অভিযুক্ত রুবেল মিয়ার সঙ্গে কথা বলা যায়নি। এ ব্যাপারে র‍্যাব-৪ মানিকগঞ্জ কার্যালয়ের কোম্পানি কমান্ডার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) উনু মং প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল মিয়া প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।