প্রধান শিক্ষকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ

বরিশাল জেলার মানচিত্র

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় ভেগাই হালদার পাবলিক অ্যাকাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ওই স্কুলের কক্ষের ভেতরে এ ঘটনা ঘটেছে।

ওই শিক্ষকের নাম রনজিৎ বাড়ৈ। তিনি বর্তমানে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রনজিৎ বাড়ৈয়ের দাবি, পাওনা টাকা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমানের স্ত্রী সাজেদা বেগম তাঁকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করেছেন।

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ফি বাবদ আগৈলঝাড়া বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুন আর রশিদকে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ওই টাকা তুলে রনজিৎ বাড়ৈকে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু রনজিৎ বাড়ৈ ওই টাকা প্রধান শিক্ষক হারুনকে না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেন। পরে রনজিৎ বাড়ৈকে একাধিকবার ওই টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। তবে তিনি নানা টালবাহানা করে টাকা ফেরত দেননি। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে রনজিৎ বাড়ৈ একাধিকবার অশালীন আচরণ করেছেন। পরে হারুন আর রশিদের চাপে একপর্যায়ে তিনি স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। এখন রনজিৎ টাকা ফেরত না দেওয়ায় তিনি নিজের ধার পরিশোধ করতে পারছেন না।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘সম্প্রতি পাওনাদার স্বজনেরা টাকা চেয়ে চাপ দিলে আমার স্ত্রী অপমানিত বোধ করে রেগে যান। আজ সকালে আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে স্কুলে আসেন। পরে আমরা দুজন রনজিৎ বাড়ৈর কাছে টাকা ফেরত চাই। টাকা চাওয়া নিয়ে আমার সঙ্গে রনজিৎ বাড়ৈর কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে রনজিৎ অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।’

অভিযোগ সম্পর্কে সাজেদা বেগম বলেন, ‘বারবার ওয়াদা দেওয়া সত্ত্বেও রনজিৎ টাকা দিচ্ছে না। এতে আমার পরিবার অপমানিত হয়েছে। যে কারণে রাগের মাথায় তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছি। কিন্তু লোহার রড নিয়ে মারার অভিযোগ সত্য নয়।’

পাওনা টাকার বিষয়ে রনজিৎ বাড়ৈ বলেন, তাঁর সঙ্গে মিজানুর রহমানের আর্থিক লেনদেন রয়েছে। তবে বিভিন্ন সমস্যায় কারণে তিনি টাকা পরিশোধ করতে পারেননি।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক। সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, সীমা সরকার, জগদীশ মণ্ডল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রনজিৎ বাড়ৈ টাকা নিয়ে সময়মতো ফেরত দেননি। অন্যভাবে এটার বিচার করা যেত। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী স্কুলে ঢুকে রনজিৎ বাড়ৈর ওপর হামলার বিষয়টি সমর্থনযোগ্য নয়।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হেমায়েত উদ্দিন সরদার বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। দু–এক দিনের মধ্যে সভা ডেকে সমস্যার সমাধান করা হবে।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ তাঁর কাছে অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।