প্রবেশপথ ভাঙাচোরা, দুর্ভোগ

৩২টি প্রাথমিক, ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তিনটি মাদ্রাসার প্রবেশপথ চলাচলের অনুপযোগী।

  • তাসলিমা মেমোরিয়াল একাডেমিতে যাওয়ার চারটি রাস্তার তিনটিই ভাঙাচোরা।

  • রাস্তাগুলো দ্রুত ঠিক করার ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বরগুনা জেলার মানচিত্র

কাঁচা রাস্তা। বৃষ্টির পর কর্দমাক্ত হয়ে আছে। কোথাও ইট বিছানো হলেও রাস্তা ভেঙে গেছে। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। এমন অবস্থা বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার অন্তত ৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি স্কুল খোলার পর ভোগান্তিতে পড়ছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

পাথরঘাটায় এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটা পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা টি এম শাহ আলম ও উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মনিরুল ইসলামের কাছ থেকে। তাঁদের দেওয়া তথ্য মোতাবেক, উপজেলার ৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি মাদ্রাসার প্রবেশপথ এখন চলাচলের অনুপযোগী।

তবে এই সংখ্যা আরও বেশি বলে জানিয়েছেন পাথরঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা ও প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান। তাঁরা বলেন, ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকেরা এখন যে কষ্টের মধ্যে আছেন, তা বলে বোঝানো যাবে না। সবচেয়ে বড় কষ্টের কথা হলো, রাস্তাগুলোর এই হাল বছরের পর বছরের। এখন স্কুল খুলে দেওয়ায় রাস্তাগুলো দ্রুত ঠিক করার ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।

শিক্ষা অফিস থেকে যে ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রবেশপথ ভাঙাচোরা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে পাথরঘাটা আদর্শ পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাথরঘাটা কে এম মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তাসলিমা মেমোরিয়াল একাডেমি, হাঁড়িটানা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এসকেবি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুরেন্দ্রনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাঁঠালতলী সপ্তগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সৈয়দ ফিরোজা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জালিয়াঘাটা এসএসডিপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও রূপধন বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

প্রবেশপথের অবস্থা দেখে তিনি ব্যথিত হয়েছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা চলছে।
এম এম মিজানুর রহমান, বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা

এর মধ্যে তাসলিমা মেমোরিয়াল একাডেমি বরিশাল বিভাগের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। এটি অবস্থিত পাথরঘাটা পৌর শহরের ব্যস্ততম শেখ রাসেল স্কুলসংলগ্ন এলাকায়। বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য চারটি রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে তিনটিই ভাঙাচোরা। অপর রাস্তাটি সরু হওয়ায় চলাচল করা যায় না। এতে প্রতিষ্ঠানটির সাড়ে সাত শ ছাত্রছাত্রীর পাশাপাশি শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পৌর এলাকায় অবস্থিত। ফলে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বাইরে সরকারি অন্য কোনো বিভাগ থেকে রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

পাথরঘাটা আদর্শ পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্য রয়েছে দুটি পথ। একটি পাথরঘাটা থানা কার্যালয়ের প্রাচীরসংলগ্ন। সেটি এখন পানিতে তলিয়ে আছে। অন্য পথটি পাথরঘাটা পৌর ভবন লাগোয়া। সেটি ভাঙা আর কর্দমাক্ত।

একই রকম অবস্থায় থাকা মাদ্রাসা তিনটি হচ্ছে ছোট পাথরঘাটা দাখিল মাদ্রাসা, তাফালবাড়িয়া ছালামিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও দক্ষিণ জ্ঞানপাড়া অহেদিয়া দাখিল মাদ্রাসা। আর ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে নিজলাঠিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছোট টেংরা আহমদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সৈকত গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর বাদুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম গহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম চরলাঠিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জিনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হরিণঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম বড়ইতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাথরঘাটা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুবর্ণা বড়ইতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর ছোট টেংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইকরবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেওড়াতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জ্ঞানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর তালুকের চরদুয়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর-পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এইচ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাদামতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরটানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম তালুক চরদুয়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর কাঁঠালতলী ঘরটানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর কাঁঠালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পূর্ব কালীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এম এম মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রবেশপথের অবস্থা দেখে তিনি ব্যথিত হয়েছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা চলছে।