প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত অভিযোগে শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত

সাইফুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশির) ‘কম্পিউটার অপারেটর’ পদের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলামকে (৩৫) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বিষয়টি তথ্য নিশ্চিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন।

সাইফুলের গ্রেপ্তারের বিষয়টি স্বীকার করে মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘১৫ মে থেকে সাইফুল বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। তাঁকে গত শনিবার পটুয়াখালী শহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো জঘন্য কাজের সঙ্গে আমার একজন শিক্ষক জড়িত, শোনার পর আমি লজ্জিত হয়েছি। বিভিন্ন মানুষ ফোন করে আমার কাছে ঘটনাটি জানতে চাচ্ছেন। সাইফুল কীভাবে এ ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছে, আমরা কিছুই জানি না।’ তিনি বলেন, যেহেতু প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে জন্য বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে আলাপ করে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

সাইফুলের বাড়ি কলাপাড়া উপজেলার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামে। ২০১৪ সালে খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের আগে তিনি উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের ফাতেমা হাই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গণিতের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অভিযানে ইডেন মহিলা কলেজ কেন্দ্র থেকে সুমন জোয়ারদার নামের এক চাকরিপ্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরীক্ষা শুরুর আগে সুমন হোয়াটসঅ্যাপে ৭০টি প্রশ্নের উত্তর পান, যা তিনি প্রবেশপত্রে লিখে নিয়ে আসেন। সুমনের ফোনে প্রশ্নের উত্তরগুলো পাঠান পটুয়াখালীর খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম। সুমন জোয়ারদারের তথ্যের ভিত্তিতে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আজই (মঙ্গলবার) ঘটনাটা শুনলাম। তবে কোথায় কী হয়েছে, তা আমাদের জানা নেই।’

এদিকে সাইফুলের গ্রেপ্তারের খবর শুনে কলাপাড়া এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। শিক্ষকের মতো একজন ব্যক্তির এমন জঘন্য কাজে জড়িয়ে পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, অভিভাবকসহ সচেতন মহল। মঙ্গলবার দিনভর পৌর শহরে বিষয়টি আলোচিত ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা অপরাধী যে–ই হোক, আইন অনুযায়ী তাঁর বিচার দাবি করেন।