ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রমজানুলের বাড়িতে লাশের জন্য অপেক্ষা

দেড় বছর আগে ফায়ার সার্ভিসের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন রমজানুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

গত শনিবার রাতে আগুনে পুড়ে যাচ্ছিল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপো। অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে আগুন নেভাতে যান ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রমজানুল ইসলাম (২২)। তবে সেই আগুনই রমজানুলের জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছে।

ঘটনাস্থলে শনিবার রাতেই রমজানুলের মৃত্যু হয়েছে। লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে দেরি হওয়ায় গতকাল রোববার রমজানুলের বাড়িতে মৃত্যুর সংবাদ পৌঁছায়। রমজানুলের বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলার হেরুয়া বালুরঘাট গ্রামে। খবর পাওয়ার পর গতকাল রাতেই রমজানুলের মা কামরুন্নাহার বেগম, চাচা আবুল কাশেম ও ছোট ভাই তারিকুল ইসলাম চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন। রমজানুলের নিথর দেহ এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। সেখানে রমজানুলের স্ত্রী রূপা ইসলামও আছেন।

রমজানুলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেড় বছর আগে ফায়ার সার্ভিসের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন রমজানুল। মাস তিনেক আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনে বদলি হন। সবকিছু ভালোই চলছিল। চাকরি পাওয়ার কয়েক মাস পর বিয়ে করেছিলেন এই তরুণ। স্ত্রীকে নিয়ে সীতাকুণ্ডতেই থাকতেন তিনি।

রমজানুলেরা দুই ভাই ও দুই বোন। রমজানুল সবার বড়। ছোট ভাই তারিকুল ইসলাম চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষা পাস করে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য চেষ্টা করছেন। রমজানুলের ছোট বোন আশামণি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে নবম ও আঁখিমণি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। রমজানুলের আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের সবাই শোকগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। রমজানুলের বাবা আকরাম হোসেন একটি হত্যা মামলায় কারাগারে আছেন।

রমজানুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

রমজানুলের চাচা চরশেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মো. জামান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘রমজানুলের দুই বোনসহ আমরা এখন বাড়িতে আছি। রমজানুলের মা, ছোট ভাই আর আমার ভাই লাশ নিতে গেছেন। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে আশামণি ও আঁখিমণি চুপচাপ হয়ে গেছে। আমরা এখন ছেলেটার লাশের জন্য অপেক্ষা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘রমজানুল তো রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছে। তাই ছেলের লাশ দেখার জন্য আকরাম হোসেনকে মুক্তি দেওয়া হোক। এ জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’