ফিরলেন ধর্মীয় বক্তা ত্ব-হা, চাকরি হারালেন বন্ধু সিয়াম

রংপুর জেলার মানচিত্র

ধর্মীয় বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান গাইবান্ধায় যে বন্ধুর বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন বলে খবর বেরিয়েছে, সেই বন্ধুই নাকি বিষয়টি জানতেন না। সিয়াম ইবনে শরীফ নামের ওই বন্ধু চাকরির সুবাদে থাকেন রংপুর নগরে। তিনি বলছেন, ত্ব-হার সন্ধান চেয়ে রংপুরে দুটি মানববন্ধনে অংশও নিয়েছিলেন তিনি। এখন ত্ব-হার ঘটনায় চাকরি হারাতে হয়েছে সিয়ামকে।

সিয়াম রংপুরে একটি মুঠোফোন সেট কোম্পানিতে কর্মকর্তা হিসেবে মাত্র তিন মাস আগে যোগ দেন। আজ রোববার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি চাকরি হারানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সিয়াম বলেন, তাঁর বাড়ি গাইবান্ধায়। তবে চাকরির সুবাদে এখন রংপুরে বসবাস করেন। আবু ত্ব-হা আদনান তাঁর স্কুলজীবনের বন্ধু। ত্ব-হাসহ চারজন যে তাঁর বাড়িতে ছিলেন, তা তিনি জানতেন না। বন্ধু তাঁকে বিষয়টি জানাননি। এমনকি তাঁর (সিয়ামের) মা–ও এ বিষয়ে তাঁকে কিছু বলেননি। বন্ধু ত্ব-হা নিখোঁজ হয়েছেন শুনে ব্যথিত হন তিনি। তাঁর সন্ধান চেয়ে রংপুরে দুটি মানববন্ধন হয়। তাতে অংশও নেন তিনি। তাঁর বাড়িতে ত্ব-হাসহ চারজনের থাকার খবর শুনে তিনি অবাক হয়ে যান।

সিয়ামের ১০ মাসের একটি শিশুসন্তান রয়েছে। চাকরি হারানোর পর মনটা ভীষণ খারাপ। বিশেষ করে শিশুসন্তানকে নিয়ে এখন কী করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না তিনি। এসব কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে আসে তাঁর। একপর্যায়ে ফোনটা রেখে দেন তিনি।

সিয়ামকে চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুঠোফোন সেট কোম্পানিটির রংপুরের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ধর্মীয় বক্তা ত্ব-হার বিষয়টি দেশের আলোচিত একটি ঘটনা। পুরো বিষয়টি জানার পর সিয়ামকে গতকাল শনিবার রাতে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

আবু ত্ব-হা আদনান সপরিবার রংপুর শহরে থাকেন। ১০ জুন রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরদিন তাঁর মা আজেদা বেগম রংপুর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

আজেদা বেগম প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তাঁর ছেলে অনলাইনে আরবি পড়ানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন মসজিদে জুমার খুতবা দিতেন। ১০ জুন বিকেল চারটার দিকে ভাড়া করা একটি গাড়িতে রংপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই সঙ্গী আবদুল মুহিত ও ফিরোজ আলম। গাড়িচালক হিসেবে ছিলেন আমিরউদ্দিন। রাত ২টা ৩৬ মিনিটে ত্ব-হাকে তাঁর স্ত্রী ফোন দেন। তখন বলেন, তিনি এখন ঢাকার গাবতলীতে আছেন। মুঠোফোনের চার্জ প্রায় শেষ। এরপর থেকে ত্ব-হাসহ চারজনের মুঠোফোন নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার আট দিন পর শুক্রবার চারজনকেই নিজ নিজ বাড়িতে পাওয়া যায়।