ফুটপাতে আওয়ামী লীগ নেতার দোকানঘর

জেলা আ.লীগের নেতা বাবু শরীফ বলেছেন, মেয়র ও কাউন্সিলরকে জানিয়ে ওই ঘর ৈতরি করেছেন।

মাদারীপুর শহরে ফুটপাত দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে দোকান। গত মঙ্গলবার কলেজ রোড এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুর সরকারি কলেজ রোড এলাকায় ফুটপাত দখল করে চারটি টিনশেড দোকানঘর তৈরি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা। দোকানগুলো ইতিমধ্যে তিনি ভাড়া দিয়েছেন। এদিকে ফুটপাতের ওপর স্থাপনা থাকায় রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের।

মাদারীপুর সরকারি কলেজের পেছনের সড়কটি কলেজ রোড নামে পরিচিত। পৌরসভার ব্যস্ততম এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত স্কুল, কলেজের অসংখ্য শিক্ষার্থী চলাচল করে। সড়কটির দুই পাশেই ফুটপাত রয়েছে। কলেজের পেছনের গেটের সামনে পাঁচ–ছয় দিন আগে টিনশেডের চারটি দোকানঘর তুলেছেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বাবু শরীফ। দোকানপ্রতি ২০ হাজার টাকা আগাম ও প্রতি মাসে প্রতি দুই হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে বাবু শরীফ মুঠোফোনে বলেন, ‘কলেজ রোডে আগেই থেকেই আমার দোকান ছিল। নতুন রাস্তা করার সময় দোকানঘর ভাঙা পড়ে। ফুটপাতের পাশে আমার জমি রাখা আছে। নতুন করে টিনশেড দোকান করার সময় দেড় ফিটের মতো ফুটপাতে ঢুকে পড়েছে। বিষয়টি মেয়র ও কাউন্সিলরকে জানিয়েছি। কাঁচা দোকানঘর। পৌরসভার প্রয়োজনে ভেঙে ফেলতে পারব।’

জানতে চাইলে মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন বলেন, সড়কের ফুটপাত দখল করে নতুন কয়েকটি দোকান তোলার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। পৌরসভার বাসিন্দারা চাইলে সে যে–ই হোক না কেন, ফুটপাত দখল করে দোকানঘর রাখতে পারবেন না। বিষয়টি সরেজমিনে দেখা হবে।

গত মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, কলেজের পেছনের ফটকের সামনে ফুটপাত দখল করে চারটি ঘর। একটি দোকানে চা, কফি বিক্রি হচ্ছে। অন্য দুটি দোকান ফটোকপি ও স্টেশনারি বিক্রির। একটি দোকান বন্ধ রয়েছে। সড়কটির প্রায় ১০০ মিটার দখল করে ওই স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। দোকানগুলোর সামনে বসার জন্য চেয়ার ও টুল রাখা। ওই অংশে পথচারীরা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছেন।

ওই সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী কলেজছাত্র নাজমুল হোসেইন বলেন, ‘কলেজ রোডে আরও দোকান আছে। কিন্তু একটিও তো ফুটপাত দখল করে নেই। হঠাৎ করে ফুটপাতের ওপরেই চারটি দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। প্রথমে কিছুটা অবাক হয়েছি। পরে শুনি স্থানীয় প্রভাবশালীরা এই দোকান ভাড়া দিয়েছেন।’

কলেজের আরেক শিক্ষার্থী খুশি রায় বলেন, ‘ফুটপাত দিয়ে আমরা রোজই হেঁটে কলেজ যেতাম। এখন পথের মধ্যে দখল থাকায় ফুটপাত ব্যবহার করা হয় না। সড়কে নেমে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়।’

এ সম্পর্কে জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন বলেন, ফুটপাত দখল করে সাধারণ মানুষের চলাচলে কোনো বাধা সৃষ্টি করার সুযোগ নেই। কলেজ রোডে ফুটপাত দখল করে দোকানঘর ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান চালিয়ে ভেঙে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে।