ফুটপাতে বসতে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ

পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ না করার দাবি জানিয়ে হকাররা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। গতকাল সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সড়কের চাষাঢ়ায়
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে বসতে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়কে পুরোনো কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেন হকাররা। রোববার সন্ধ্যায় নগরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় ওই আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে বসতে দেওয়ার দাবিতে হকাররা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে সন্ধ্যা সাতটার দিকে সাধু পৌলের গির্জার সামনে হকাররা সড়ক বন্ধ করে বসে পড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তাঁরা পুরোনো কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ছাড়া যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন তাঁরা। পরে পুলিশ গিয়ে ধাওয়া দিয়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং পানি দিয়ে আগুন নেভালে সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এতে ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

হকার সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আসাদুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, হকারদের পুনর্বাসনের দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ সমাবেশ করছিলেন। রোববার বিকেলে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে কিছু হকার ফুটপাতে দোকান বসাতে না পেরে ঘোরাঘুরি করছিলেন। এ সময় পুলিশ গিয়ে তাঁদের লাঠিপেটা শুরু করে। লাঠিপেটায় তাঁদের সাত হকার আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, তাঁদের চাষাঢ়া হকার মার্কেটে বহুতল ভবন নির্মাণ করে সেখানে পুনর্বাসন করা হোক। পুনর্বাসনের আগপর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়কে সন্ধ্যার আগে বা পরে ফুটপাতে বসতে দেওয়া হোক।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ জামান প্রথম আলোকে জানান, হকাররা ফুটপাতে বসতে দেওয়ার দাবিতে কালীবাজার ও চাষাঢ়ায় সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা পুরোনো কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে পুলিশ গিয়ে ধাওয়া দিয়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার বসানো নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হকারদের হামলায় মেয়র আইভী, সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। এ সময় নিয়াজুল ও শাহ নিজাম নামের দুজনকে অস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র মহড়া দিতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু আদৌ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। পরে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন বঙ্গবন্ধু সড়ক বাদ দিয়ে নগরীর চারটি সড়কের ফুটপাতে হকারদের বসতে সাময়িক অনুমতি দেয়। কিন্তু হকাররা ওই চার সড়ক ছাড়াও বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাত দখল করে তাঁদের ব্যবসা–বাণিজ্যের পসরা সাজিয়ে বসাতেন। এতে পথচারীসহ নগরবাসীকে চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হতো।