‘ফুল ক্যা বাবা, হামাক ভিক্ষে দ্যাও’

গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডে সোমবার ভিক্ষা করছিলেন আজিরন নেছা। ভিক্ষার বদলে হঠাৎ তাঁর হাতে দেওয়া হলো একটি লাল গোলাপ
ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডে আজ সোমবার ভিক্ষা করছিলেন আজিরন নেছা (৫৫)। ভিক্ষার বদলে তাঁর হাতে দেওয়া হলো একটি লাল গোলাপ। আজিরন নেছা বললেন, ‘ফুল ক্যা বাবা, হামাক ভিক্ষে দ্যাও।’ তাঁকে জানানো হলো, আজ ভালোবাসা দিবস। তারপর তিনি হেসে বললেন, ‘জীবোনে কাউয়ো হামাক ফুল দ্যায় নাই। তোমরা দিল্যান। বাড়িত যায়া ফুলকোনা নাতিট্যাক দেমো।’

এ সময় একই রোডে এক রিকশাচালককে দাঁড় করানো হয়। রিকশাচালক বললেন, ‘কোনটে যাবেন, এ্যাকসাত চড়েন।’ রিকশায় না উঠে তাঁকেও একটি লাল গোলাপ দেওয়া হলো। তিনি বললেন, ‘ভালোবাসার দিন ছোলপোলগুলে ফুল–দেওয়াদেওয়ি করে জানি। কিন্তো ফুলের দাম বেশি, হামরা কিনব্যার পাইনে। ভালোই হলো তোমাগরে ফুলট্যা বাড়ি–আলিক দেমো।’

ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা হিসেবে এক রিকশাচালককে একটি গোলাপ উপহার দেওয়া হয়। সোমবার গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডে
ছবি: প্রথম আলো

এভাবেই সোমবার দিনব্যাপী বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ছিন্নমূলসহ নানা পেশাজীবী মানুষের মধ্যে লাল গোলাপ বিতরণ করে জুম বাংলাদেশ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংগঠনের সদস্য একঝাঁক তরুণ-তরুণী গোলাপ বিতরণ করেন। তাঁদের গায়ে সবুজ রঙের টি-শার্ট। টি-শার্টের সামনের অংশে লেখা ‘লাভ ফর অল’। আছে লাভ চিহ্নও। হাতে লাল গোলাপ। যেখানেই যাঁকে পান, তাঁকে একটি লাল গোলাপ দিয়ে ভালোবাসা ব্যক্ত করেন। আজ তাঁরা গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোড, আসাদুজ্জামান মার্কেট, পৌর পার্ক, কলেজ রোড, সদর হাসপাতাল ও রেলস্টেশনে গিয়ে পাঁচ শতাধিক মানুষকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। পাশাপাশি তাঁরা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে খাবার ও মাস্ক বিতরণ করেন।

এ বিষয়ে জুম বাংলাদেশ গাইবান্ধা শাখার সমন্বয়ক মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সবাই ভালোবাসা দিবস মানে কেবল প্রেমিক-প্রেমিকার ভালোবাসা বোঝেন। মানুষের গতানুগতিক ধারণা পাল্টে দিতে তাঁদের এই প্রয়াস।