বগুড়ায় দুই নৈশপ্রহরী হত্যার ঘটনায় মামলা

বগুড়া জেলার মানচিত্র

বগুড়ার বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্পনগরী এলাকার একটি কারখানা থেকে দুই নৈশপ্রহরীকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। মুক্তিপণ না পেয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

অপহরণের ৩৬ ঘণ্টা পর ওই কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশনের ম্যানহোল থেকে শুক্রবার বিকেলে দুই নৈশপ্রহরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁরা হলেন সদর উপজেলার বড় সরলপুর গ্রামের আবদুল হান্নান (৪৮) ও শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান প্রতাপপুর গ্রামের শামসুল ইসলাম (৬০)।

এ ঘটনায় আবদুল হান্নানের স্ত্রী হীরা বেগম বাদী হয়ে শনিবার বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলাটি করেন। বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, ‘মামলা করার পরপরই এসপি স্যারের নির্দেশে এর তদন্তভার ডিবির কাছে ন্যস্ত করা হয়েছে।’

মামলার এজাহারে বলা হয়, আবদুল হান্নান প্রায় ১০ বছর ধরে বগুড়ার বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় মেসার্স মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানায় নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কারখানার উদ্দেশে গত বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। এরপর গত বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া সাতটার দিকে আবদুল হান্নানের মুঠোফোন নম্বর থেকে তাঁর স্ত্রীর নম্বরে কল আসে। এ সময় নিজেকে অপহরণকারী পরিচয় দেওয়া অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা নৈশপ্রহরী হান্নান ও শামসুলকে অপহরণ করেছি। আপনার সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। বিরোধ কারখানার মালিকের সঙ্গে। কারখানার মালিককে বিকেল পাঁচটার মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে দুজনকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে বলেন।’

বাদী মামলায় আরও উল্লেখ করেন, অপহরণকারীদের ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি কারখানার মালিককে জানান। এ সময় কারখানার মালিক সাজ্জাদুর রহমান বলেন, তাঁর মুঠোফোনেও পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে খুদে বার্তা এসেছে। মুক্তিপণ না দিলে অপহৃত দুজনকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এরপর শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে খবর আসে, বিসিক শিল্পনগরী এলাকার মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানহোল থেকে ওই দুজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, হান্নান ও শামসুলের গলায় মাফলার প্যাঁচানো। তাঁদের মাথার পেছনে ও কপালে কাটা জখমের চিহ্ন।

এদিকে এ ঘটনায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) শনিবার রাতে কারখানার মালিক মাসুদুর রহমানের তিন ছেলে সাজ্জাদুর রহমান, আলিমুর রাজীব ও অপু রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

বগুড়ার ডিবির পরিদর্শক সাইয়ান ওলিউল্লাহ শনিবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, কারখানার মালিকের তিন ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাঁরা ডিবির হেফাজতে। তদন্তে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেন তাঁরা। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য ডিবির একাধিক দল মাঠে আছে।