বগুড়ায় দুই নৈশপ্রহরী হত্যায় মামলা হয়নি, শনাক্তও নেই

হাতকড়া

বগুড়ার বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্প এলাকার একটি কারখানা থেকে দুই নৈশপ্রহরীকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। এ ঘটনায় কাউকে শনাক্ত বা গ্রেপ্তারও করতে পারেনি পুলিশ।

নিখোঁজের ৩৬ ঘণ্টা পর ওই কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশনের ম্যানহোল থেকে গতকাল শুক্রবার বিকেলে অপহৃত দুই নৈশপ্রহরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) গতকাল রাতে কারখানার মালিক মাসুদুর রহমানের তিন ছেলে সাজ্জাদুর রহমান, আলিমুর রাজীব ও অপুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

আরও পড়ুন

তবে বগুড়ার ডিবির পরিদর্শক সাইয়ান ওলিউল্লাহ আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, কারখানার মালিকের তিন ছেলেকে আটক করা হয়নি। তাঁরা ডিবির হেফাজতে। তদন্তে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেন তাঁরা। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য ডিবির একাধিক দল মাঠে আছে।

হত্যাকাণ্ডের শিকার দুই নৈশপ্রহরী হলেন সদর উপজেলার বড় সরলপুর গ্রামের আবদুল হান্নান (৪৮) ও শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান প্রতাপপুর গ্রামের শামসুল ইসলাম (৬০)।

কারখানা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের কারখানায় ওই দুই নৈশপ্রহরী কাজ করতেন। গত বুধবার দিবাগত রাতে ডিউটি করতে এসে ভোর চারটার দিকে তাঁরা নিখোঁজ হন। পরে গতকাল বিকেলে কারখানার তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের ম্যানহোলে তাঁদের লাশ খুঁজে পান কারখানার লোকজন।

বগুড়ার ফুলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুজন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, লাশ দুটির গলায় গামছা প্যাঁচানো ছিল। মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তবে হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো জানা যায়নি।

লাশ উদ্ধারের পর মাছু অ্যান্ড সন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (মেটাল কারখানা) মালিকের ছেলে সাজ্জাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার দিনের বেলা হান্নানের মুঠোফোন নম্বর থেকে পাঠানো খুদে বার্তায় নিখোঁজ দুজনকে ফিরে পেতে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয় এবং লালমনিরহাট রেলস্টেশন এলাকায় টাকা পৌঁছে দিতে বলা হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পর গতকাল সকালে একই নম্বর থেকে আরেকটি বার্তা পাঠানো হয়। সেখানে নিখোঁজ দুজন বিপদ আছেন বলে জানানো হয়।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আলী হায়দার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, কারখানার মালিকের ছেলে যে খুদে বার্তার কথা বলেছেন, সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।