বগুড়ায় স্ত্রী হত্যার ২০ বছর পর পলাতক স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড

আদালত
প্রতীকী ছবি

বগুড়ায় দিনদুপুরে স্ত্রী শাকিলা খাতুনকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার ২০ বছর পর পলাতক স্বামী মোহাম্মদ রতনকে (২৮) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আরও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩-এর বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন এ রায় ঘোষণা করেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ রতন বগুড়া সদরের মধ্য পালশা গ্রামের মৃত শুক্কর মোহাম্মদের ছেলে। আসামি পলাতক থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তারের পর হাইকোর্টের অনুমতি সাপেক্ষে সাজা কার্যকর করার কথা রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার শাকিলা সদরের গাজি পালশা এলাকার আজাহার আলীর মেয়ে। ২০০২ সালের ২১ জুন শাকিলাকে দিনদুপুরে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন রতন। মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বিনয় কুমার দাস নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ১৯৯২ সালের দিকে রতনের সঙ্গে শাকিলার বিয়ে হয়। বিয়ের পর পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দিলে একপর্যায়ে শাকিলা বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। ২০০২ সালের ২১ জুন সংসার করার উদ্দেশ্যে শাকিলাকে বাবার বাড়ি থেকে কবিরাজ দেখানোর কথা বলে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। পরে দিনদুপুরে শাকিলাকে ফাঁকা মাঠে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন রতন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় শাকিলার বড় ভাই সারোয়ার হোসেন বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আদালত সূত্র জানায়, মামলার পর সদর থানা-পুলিশ রতনকে গ্রেপ্তার করে। পরে রতন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রতনকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ১০ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পান রতন। একপর্যায়ে আত্মগোপন করেন তিনি। তাঁর অনুপস্থিতিতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এস্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হয়। আদালত সাক্ষ্য-প্রমাণ, যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আসামির অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর জহুরুল ইসলাম এবং আসামিপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী তাজ উদ্দিন।