‘বঙ্গবন্ধুর সৈনিকেরা বিমান ধরে পালিয়ে যাওয়ার জন্য জন্ম নেননি’
‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুলের ফেসবুক স্ট্যাটাসের পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শেষে এক সমাবেশে আসিফ নজরুলের ওই স্ট্যাটাসের জবাব দেন মেয়র।
এর আগে নগরের প্রধান সড়কে নগর আওয়ামী লীগসহ এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের সঞ্চালনায় নগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মেয়র খায়রুজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খায়রুজ্জামান বলেন, আজ আফগানিস্তানে কাবুল এয়ারপোর্টে বিমানে মানুষ উঠেছে পাগলের মতো। মনে করেছে, তালেবানরা মেরে ফেলবে। বিমানের ছাদে বাস-ট্রেনের মতো উঠে পড়েছে লোকজন। পালিয়ে যাবে, কোনো তালেবান যেন ধরতে না পারে। এত আতঙ্ক সেখানে। সেই ঘটনাকে দৃষ্টান্ত ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘দেখছেন তো কাবুল বিমানবন্দরে কীভাবে পালাচ্ছে, সময় হলে কিন্তু আপনারাও ওই একই অবস্থায় পড়বেন। বিমানবন্দরে গিয়ে বিমান ধরতে পারবেন না।’
আসিফ নজরুলের উদ্দেশে মেয়র খায়রুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ বঙ্গবন্ধুর সন্তানেরা, সৈনিকেরা বিমান ধরে পালিয়ে যাওয়ার জন্য জন্ম নেননি। তাঁরা এ দেশে রক্ত দেবেন, এ দেশে লড়াই করবেন। এই রকম খোয়াব বা স্বপ্ন যাঁরা দেখছেন, তাঁদের স্বপ্ন দেখা তাঁরা চিরজীবনের জন্য ঘুচিয়ে দিতে চান।
এই প্রসঙ্গ টেনে মেয়র আরও বলেন, ‘শুধু এবারই নয়, সামনের বারে নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকেই রায় দেবে। কারণ, আওয়ামী লীগ জনগণের খেদমত করছে, উন্নয়ন করছে। করোনা না এলে আজ দেড় বছরে বাংলাদেশ ৮ থেকে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করত। কাজেই বলতে চাই, শেখ হাসিনার কাছে দেশ নিরাপদ। এটা জনগণ বুঝে গেছে।’
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দিনের কথা স্মরণ করে মেয়র বলেন, সেদিন তিনি ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সেদিন আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মীকে একসঙ্গে নিশ্চিহ্ন করার জন্য কী জঘন্য একটা চক্রান্ত তারেক জিয়া তাঁর মা খালেদা জিয়ার নির্দেশে করেছিলেন। ওই সময় ঘটনার আগে ডিজিএফআইয়ের গাড়ি প্রদক্ষিণ করেছে। তাঁরা রেকি করে দেখেছে, কোথায় কী আছে না আছে। গ্রেনেড নিয়ে কোথায় কে থাকবে, তার নকশা আগেই বানানো ছিল, তা–ও তাঁরা জানেন। এটা অনেক ওপর লেভেল থেকে চক্রান্ত, সেটা তাঁদের ভুলে গেলে চলবে না। সেদিন একজন পুলিশও আহত হননি। একজন পুলিশও অপরাধীদের ধরার চেষ্টা করেননি। বরং এ ঘটনায় প্রতিবাদকারী আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। তাহলে নির্দেশ ছিল কী, যাঁরা হামলা করবেন, তাঁরা রাষ্ট্রের মেহমান।
মেয়র খায়রুজ্জামান আরও বলেন, কথায় আছে, পাপ বাপকেও ছাড়ে না। সেই পাপ ধরেছে আজ খালেদা জিয়াকে। সেই পাপ ধরেছে আজ তারেক জিয়াকে। সেই একই পাপের কারণে এতগুলো বছর ধরে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর কারাগারে আছেন। তাঁর মুক্তির জন্য বিএনপি কোনো দিন কোনো কথা বলেনি।