বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে প্রায় ৩০ কিলোমিটার যানজট

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে তীব্র যানজট। আজ সকালে মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার পৌলী এলাকায়কামনাশীষ শেখর

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার তারুটিয়া পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার মহাসড়কে যানজটে আটকে ঈদে ঘরমুখী মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সকালে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় যানজটে আটকে পড়া মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলপ্লাজা সূত্র জানায়, স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ হাজার যানবাহন সেতু পারাপার হয়। কিন্তু কয়েক দিন ধরে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি যানবাহন চলাচল করছে। গতকাল সোমবার সকাল ছয়টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ হাজার ৪২৩টি যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু পারাপার হয়েছে।

স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করায় গতকাল গভীর রাত থেকেই যানজট শুরু হতে থাকে। সেতুর পশ্চিম প্রান্তে (সিরাজগঞ্জের দিকে) যানজট শুরু হয়। পরে সেই জট দীর্ঘ হতে হতে সেতু অতিক্রম করে পূর্ব প্রান্তে (টাঙ্গাইলের দিকে) চলে আসে। সকাল পর্যন্ত সেই জট সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার তারুটিয়া পর্যন্ত চলে আসে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে তীব্র যানজটের মধ্যে বৃষ্টি ঘরমুখী যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আজ সকালে মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার পৌলী এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

আজ সকালে মহাসড়কে গিয়ে দেখা যায়, ৩০ কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে উত্তরবঙ্গগামী লেন যানবাহনে পূর্ণ হয়ে রয়েছে। এক জায়গায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে একটু একটু করে এগোতে হচ্ছে। সদর উপজেলার তারুটিয়া এলাকায় ট্রাকচালক মোহর আলী জানান, তিনি আধা ঘণ্টার বেশি এক স্থানে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। দুই কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ৪০ মিনিট সময় লেগেছে। বাস, মিনিবাস, ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি ট্রাক, পিকআপ ভ্যানে নিম্ন আয়ের ও শ্রমজীবী মানুষকে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়। সকালে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় তাদের দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

গাজীপুর থেকে বগুড়াগামী ট্রাকের যাত্রী সোবহান শেখ জানান, তিনি একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। কম ভাড়ায় গন্তব্যে পৌঁছার জন্য ট্রাকে উঠেছেন। এখন যানজট ও বৃষ্টিতে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

মহাসড়কের সদর উপজেলার রসুলপুর, রাবনা, কালিহাতী উপজেলার পৌলী ও এলেঙ্গা এলাকায় যানজটে আটকে পড়া যাত্রীদের, বিশেষ করে নারী যাত্রীদের দুর্ভোগ বেশি ছিল। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে তাঁদের মহাসড়কের আশপাশের বাড়িঘরে যেতে দেখা যায়।

এলেঙ্গা সিএনজি স্টেশনে কথা হয় ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী মাইক্রোবাসের যাত্রী হাবিবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রতিবার ঈদে ঘরে ফিরতে তাঁদের এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। টাঙ্গাইল বাইপাস থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তা পেরোতে সময় লেগেছে দুই ঘণ্টারও বেশি। একই স্থানে বগুড়াগামী বাসের যাত্রী হুমায়ুন রশীদ জানান, এই যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়তে হয়। এ কারণে ঈদের আনন্দই মাটি হয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, যানজট নিরসনে জেলা পুলিশের ছয় শতাধিক এবং হাইওয়ে পুলিশের দুই শতাধিক সদস্য মাঠে রয়েছেন।