বরিশালে বৃষ্টি ও জোয়ারে নিচু এলাকা প্লাবিত
বরিশালে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে থেমে থেমে মাঝারি ও হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে এই অঞ্চলের নদ-নদীতে স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে বেশি জোয়ার হচ্ছে। এ কারণে বরিশাল নগর ও বিভাগের সব কটি জেলার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বরিশালের কীর্তনখোলা, বরগুনার বিষখালী, পায়রা, পিরোজপুরের বলেশ্বর, ভোলার তেঁতুলিয়া, মেঘনা—এসব নদ-নদীতে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে জোয়ার প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এসব নদ-নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোর চর ও নিচু এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে।
শনিবার বিকেলে কীতর্নখোলা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে বরিশাল সদরের দপদপিয়া, চরবাড়িয়া, কাউয়ার চর কালিজিরা, চরমোনাই ইউনিয়নের চর হোগলা, পশুরিকাঠি, গিলাতলী এবং নগরের রসুলপুর, পলাশপুর, আমানতগঞ্জ; জেলার মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, মুলাদি উপজেলার অনেক এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
একইভাবে বরগুনার তালতলী উপজেলার জয়ালভাঙা, খোট্টারচর, নলবুনিয়া, তেঁতুলবাড়িয়া, নিশানবাড়িয়া, অংকুজানপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম দিনে ও রাতের জোয়ারে দুই দফায় প্লাবিত হচ্ছে। জয়ালভাঙা গ্রামের বাসিন্দা নূর ইসলাম ও আলো মিয়া বলেন, পায়রা নদীতে দুই দিন ধরে অস্বাভাবিক জোয়ার হচ্ছে। এতে অন্তত ৪০০ পরিবারের ঘরদোর প্লাবিত হচ্ছে।
একইভাবে ভোলার বিচ্ছিন্ন মনপুরায় গত দুই দিনের টানা বর্ষণ ও পূর্ণিমার প্রভাবে মেঘনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে। দিনে-রাতে দুই বেলার জোয়ারে পানিতে বাঁধের বাইরের এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে ১০ গ্রামের নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে আছেন।
বরিশাল সদরের চরমোনাই ইউনিয়নের পশুরিকাঠি গ্রামের কালু মল্লিক ও কালাম হাওলাদার বলেন, শনিবার বিকেলে তাঁদের গ্রামে কীর্তনখোলার জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। এতে ঘরদোর পানিতে প্লাবিত হয়। এই গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আগে আমাদের এখানকার উঁচু এলাকায় কখনো পানি ঢুকত না। কিন্তু দুই বছর ধরে নতুন নতুন এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।’
বরিশাল আবহাওয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, বরিশালে শনিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বিভাগের অধিকাংশ স্থানে আরও ভারী অথবা মাঝারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে। একই সঙ্গে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রবৃষ্টির আশঙ্কা আছে।
বরিশাল আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মো. মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিম বায়ুপ্রবাহের কারণে এ অঞ্চলের নদ-নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ার হতে পারে।