বরিশাল বিভাগে করোনা শনাক্তের হার সাড়ে ৩৭

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

বরিশাল বিভাগে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি ক্রমেই বাড়ছে। চার দিন ধরে এই বিভাগে সংক্রমণের হার ওঠানামা করছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাবে, গতকাল শনিবার সকাল থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত বিভাগে ১৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষা ৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ৩৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। এর আগের দিন গত শুক্রবার সকাল থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার অনেকটা কমেছিল। এদিন ১৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্তের হার কমে দাঁড়িয়েছিল ১৬ দশমিক ৫৫।

তবে তার আগের দিন শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে ১২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এতে শনাক্তের হার ছিল ৫৯ দশমিক ১৭। ওই দিন বরিশাল জেলায় ৫২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫২ জনেই করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্ত হার ছিল শতভাগ।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশের মতো বরিশাল বিভাগেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। গত এপ্রিল ও মে মাসে বিভাগের করোনা সংক্রমণ তলানিতে নামলেও জুনের শেষে এসে তা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু বরিশাল নগরে কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। প্রশাসনেরও তদারকি লক্ষ করা যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, গত এপ্রিল ও মে মাসে বিভাগের করোনা সংক্রমণ তলানিতে নামলেও জুনের শেষ দিকে এসে তা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত চার দিনে সংক্রমণের আশঙ্কাজনক উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত বিভাগে শনাক্তের হার ছিল শূন্য। ১৪ জুন একজনের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর তা ক্রমেই বাড়তে থাকে। শুক্রবার তা একলাফে ৫৯ দশমিক ১৭ শতাংশে পৌঁছায়।

গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ চূড়ায় ছিল। গত জানুয়ারিতে বিভাগের শনাক্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৩১৭। ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে হয় ৩ হাজার ৮৮৪ জন এবং মার্চে করোনা শনাক্ত হয়েছিল ১৪৪ জনের। কিন্তু এপ্রিলে তা কমে হয় মাত্র ৬ জন এবং মে মাসে তা আরও কমে দাঁড়ায় মাত্র ৩ জনে। এ ছাড়া জুনে বিভাগে ১৮৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে কোনো মৃত্যু ছিল না। বিভাগে এযাবৎ করোনায় মারা গেছেন ৬৯০ জন।

সংক্রমণের গতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে বরিশাল জেলায় ৫২ জন। এ ছাড়া ভোলায় ৩ জন, পটুয়াখালীতে ৩ জন, পিরোজপুরে ৩ জন, তবে বরগুনা ও ঝালকাঠিতে কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমে অবনতি হচ্ছে। এখন ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি দেখা দিচ্ছে। কিন্তু অনেকেই করোনা পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। এটা পরিস্থিতিকে জটিল করে দিতে পারে। এ জন্য আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি, যাতে কোনো রোগীর মধ্যে এ রকম উপসর্গ থাকলে করোনা পরীক্ষা করানো হয়।’


শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, মাস্ক পরার ব্যাপারে এখন যেভাবে উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে, সেটাও আশঙ্কার বিষয়। সামনে পবিত্র কোরবানির ঈদ। এখন গরুর বাজারগুলোয় বিপুলসংখ্যক লোকের সমাগম হবে। ঈদে অনেক লোক বাসে-লঞ্চে গ্রামে ফিরবে। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করা হলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে। এ জন্য সবাইকে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার ওপর জোর দিতে হবে।

জানতে চাইলে বরিশাল জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (নেজারত) সুব্রত বিশ্বাস দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের জন্য এখনো অভিযান শুরু করিনি। আজ রোববার থেকে শুরু হবে।’