বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ, ভাঙচুর

বরিশাল নদী বন্দরে প্রবেশের জন্য টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিআইডব্লিউটিএর কাউন্টারের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়
ছবি : প্রথম আলো

বরিশাল নদী বন্দরে প্রবেশের জন্য টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে কান ধরে ওঠবস ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিআইডব্লিউটিএর কাউন্টারের কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা নদী বন্দরে ঢুকে চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করেছে। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বরিশাল নদী বন্দরের দুই নম্বর গেটের কাউন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসাইন বলেন, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে একজন অতিথিকে বিদায় দিতে বরিশাল নদী বন্দরে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুর রহমান, মো. রাকিব, আশিকুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ইমরান হোসেন। নৌবন্দরে প্রবেশের টিকিট কাটেন তাঁরা। কিন্তু তাদের টাকা টিকিট না ছিঁড়ে তা কর্মীদের পকেটে ঢোকাতে দেখেন তাঁরা। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। তাঁদের বন্দর ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে কান ধরে ওঠ বস করানো হয়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা টের পেয়ে রাত ১০টার দিকে নদী বন্দরে এসে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘাটের টিকিট কাউন্টারের কর্মীদের বাগ্বিতণ্ডা হয়।

মারধরে আহত শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, ‘ঢাকায় যাওয়ার জন্য বরিশাল নদী বন্দরে এসেছিলাম। আমাকে এগিয়ে দিতে তিন বন্ধু এসেছিল। এ সময় কাউন্টারের লোকজন টিকিট না ছিঁড়ে তা পকেটে রাখছিল। এই নিয়ে প্রতিবাদ করলে আমাদের মারধর করে ও কান ধরে ওঠবস করায়। বিষয়টি সহপাঠীরা জানলে তারা এসে প্রতিবাদ করেছে।’

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অমিত হাসান বলেন, ‘তিন দিনের মধ্যে অভিযুক্ত কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। তা না হলে আন্দোলনে যাব।’

শুল্ক প্রহরী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি গিয়ে দেখি কাউন্টারের স্টাফদের সঙ্গে ছাত্রদের মারামারি চলছে। পরে তাদের বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারও সঙ্গে ঝামেলা হয়নি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রথমে নদী বন্দর ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ করে। পরে বন্দর ভবনে ঢুকে চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে।

বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যাঁরা অপরাধ করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর খোরশেদ আলম বলেন, ‘নদী বন্দর কর্মকর্তার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নদী বন্দরে প্রবেশ করার সময় পরিচয়পত্র দেখালে বিনা মূল্যে ঢুকতে পারবেন। তা ছাড়া যে ঘটনা ঘটেছে তাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নদী বন্দর কর্মকর্তার পক্ষ থেকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে আশ্বস্ত করা হয়েছে।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলুল করিম বলেন, ‘একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। এ নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিষয়টি সমাধান হয়েছে।’