বরিশাল মেডিকেলে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট চলছে
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন দফা দাবিতে ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের আজ রোববার দ্বিতীয় দিন চলছে। এতে হাসপাতালের রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। তিন দফা দাবিতে গতকাল শনিবার দুপুর থেকে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘট আহ্বান করেন। এরপর থেকে তাঁরা চিকিৎসাসেবা থেকে বিরত রয়েছেন।
রোগী ও স্বজনেরা জানান, ধর্মঘটের কারণে ওয়ার্ডগুলোয় ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রয়েছেন। সেই সঙ্গে গতকাল দুপুরের পর থেকে হাসপাতালের নিয়মিত চিকিৎসকেরাও তাঁদের কোনো খোঁজখবর নেননি। এমনকি কোনো চিকিৎসকের দেখাও পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা। তাঁরা আরও জানান, সচরাচর নিয়মিত চিকিৎসকেরা দিনের কোনো এক সময় ওয়ার্ডগুলোয় আসতেন। কিন্তু শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা পর্যায়ক্রমে ২৪ ঘণ্টাই ওয়ার্ডের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত থাকতেন। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে এখন কোনো চিকিৎসকই আসছেন। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন রোগী ও স্বজনেরা।
ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সজল পান্ডে বলেন, চিকিৎসক মাসুদ খানের মামলা প্রত্যাহার, তাঁর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিচার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অসত্য বক্তব্য নিয়ে মানহানির বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক বাকির হোসেন বলেন, গতকাল দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসা হয়েছিল। কিন্তু কোনো পক্ষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে ছাড় দিতে রাজি না হওয়ায় সমঝোতা হয়নি। তবে সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
২০ অক্টোবর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ইউনিট-৪-এর সহকারী রেজিস্ট্রার মাসুদ খানের ওপর হামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মাসুদ খান কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ২১ অক্টোবর পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। ২২ অক্টোবর ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা মাসুদ খানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে পরিচালকের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়ে তাঁর বিচার দাবি করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উভয় পক্ষের অভিযোগ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।