বরিশাল মেডিকেল থেকে ৪৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ৭৫টি ফ্লো মিটার গায়েব

অক্সিজেন সিলিন্ডার
ফাইল ছবি

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট থেকে ৪৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং ৭৫টি ফ্লো মিটার (অক্সিজেন পরিমাপের যন্ত্র) লাপাত্তা হয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো চুরি হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র বলছে, ১ আগস্ট থেকেই এগুলো পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করা হলেও গতকাল শনিবার সন্ধ্যার দিকে তা জানাজানি হয়ে যায়। এ ঘটনা তদন্তে ১৬ আগস্ট হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাককে প্রধান এবং সহকারী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানকে সদস্যসচিব করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আবদুর রাজ্জাক বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের স্টোর অফিসার অনামিকা ভট্টাচার্য সম্প্রতি হাসপাতালের অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ফ্লো মিটারের তালিকা তৈরি করেন। তাতে ৪৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ৭৫টি ফ্লো মিটার কম পাওয়া যায়। পরে এগুলো খুঁজেও হদিস পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তিনি হাসপাতাল পরিচালককে জানালে এ ঘটনায় ওয়ার্ড মাস্টার মশিউর আলমকে তাৎক্ষণিকভাবে বদলি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শের-ই-বাংলা হাসপাতালের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, ১ আগস্ট থেকেই হাসপাতালের করোনা ইউনিট থেকে এসব সিলিন্ডার ও ফ্লো মিটারগুলো উধাও হয়ে যায়। এত দিন বিষয়টি গোপন ছিল। এরপর এসব সিলিন্ডার উদ্ধারে চেষ্টা চালায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হদিস মেলেনি।

করোনা ইউনিটে ওয়ার্ড মাস্টারদের মাধ্যমে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও সিলিন্ডার মিটার সরবরাহ করা হয়। কোন ওয়ার্ডে কতটি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মিটার নেওয়া হয়েছে, তার তালিকা করা হয়েছে। ওই তালিকা অনুযায়ী বিভিন্ন ওয়ার্ডে তল্লাশি করে অন্তত ৪০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ৭৫টি ফ্লো মিটারের হদিস নেই। সাধারণ ওয়ার্ডেও সেগুলোর খোঁজ মেলেনি।

হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম আজ রোববার সকালে বলেন, আশঙ্কা করা হচ্ছে হারিয়ে যাওয়া অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মিটারের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। তদন্ত কমিটির প্রধান করোনায় আক্রান্ত হলেও অন্যরা কাজ করছেন। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে।

সরকারিভাবে সরবরাহ করা এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনুদান পাওয়া সিলিন্ডারসহ এই হাসপাতালের মোট ৬২৮টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। হাসপাতালের ৩০০ ওয়ার্ডের করোনা ইউনিটে প্রতিদিন সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী থাকতেন। প্রায় ৭০ শতাংশ রোগীরই কৃত্রিম অক্সিজেনের প্রয়োজন হতো। তখন অক্সিজেন নিয়ে রোগীর স্বজনদের মধ্যে হাহাকার লেগে যেত।