বাংলাবাজারে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড়

ঘাটের পন্টুনে ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় অসংখ্য যাত্রী। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাটে
প্রথম আলো

ঈদের সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় অব্যাহত রয়েছে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে। আজ রোববার সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘাটেও যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে। একই সঙ্গে যানবাহনের চাপও রয়েছে এ নৌপথে।

এদিকে প্রখর রোদ আর ভ্যাপসা গরমে ঘাটে আসা যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ঘাট কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বললেও ভিড় আর গরমে তাঁরা এসব কিছুই মানছেন না।

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ঘাটে ঢাকাগামী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ আছে। তবে গতকাল শনিবারের থেকে কিছুটা কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে। ঘাটে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মাইকিং করা হচ্ছে। সবাই মাস্ক পরতে বলা হচ্ছে। এরপরও প্রচণ্ড রোদের তাপ আর গরমে যাত্রীরা হাঁপিয়ে উঠছেন। অনেকেই মানছেন স্বাস্থ্যবিধি। যাত্রীরা নিজ থেকে সচেতন না হলে এত বলেকয়ে বা প্রচারণা করেও লাভ নেই। তিনি আরও বলেন, ‘যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামলাতে আমাদের ১৮টি ফেরি চালু আছে। ফেরিগুলোয় যাত্রীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে।’

ফেরিঘাট ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ঈদের এক দিন পর থেকে ঢাকাগামী যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। টানা সাত দিন ঘাটে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেলেও গত শুক্রবার যাত্রীদের চাপ কিছুটা কমে আসে। কিন্তু শনিবার থেকে আবারও বাড়তে থাকে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ। গতকালের তুলনায় আজ সকালে যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম দেখা গেলেও ভিড় রয়েছে প্রতিটি ফেরিতে। অনেক যাত্রী ফেরিতে উঠতে না পেরে পন্টুনে অপেক্ষমাণ।

বাংলাবাজার ফেরিঘাটের কর্মরত ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, সকাল সাড়ে সাতটার দিকে রো রো ফেরি বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ফেরিটির ওপর থেকে নিচের ডেক পর্যন্ত অন্তত তিন হাজার যাত্রী রয়েছেন। ফেরিটির এসি রুমে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ যাত্রী রয়েছেন। দাঁড়িয়ে থাকার পাশাপাশি নিচে মাদুর পেতেও বসে আছে অনেকে যাত্রী। ভিড় প্রচুর থাকায় ডেকে গায়ে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।

ঢাকাগামী যাত্রী তানজিল চৌধুরী বলেন, ‘ভেবেছিলাম ঈদের পর কয়েক দিন দেরি করে গেলে ফেরিতে লোকজনের চাপ কম হবে। কিন্তু ঘাটে এসে দেখি ভিন্ন চিত্র। আমরা যে ফেরিতে উঠেছি, তা অতিরিক্ত যাত্রীতে ভরা। এসি রুমেও গাদাগাদি।’

মাদারীপুর থেকে আসা ঢাকাগামী যাত্রী চিকিৎসক ইমদাদুল হক বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে ঢাকায় যাচ্ছি। ঘাটে এসে দেখি ঈদের ভিড় এখনো কাটেনি। প্রচুর ভিড়, কোনো রকম একটু জায়গা পেয়েছি ফেরিতে। সঙ্গে ভয়াবহ গরম আর তীব্র রোদের তাপ। দীর্ঘ সময় রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে।’

চর জানাজাত নৌপুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘ঘাটে নৌপুলিশের একটি টিম সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে। ফেরিতে কোনো প্রকার দুর্ঘটনা এড়াতে আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। একই সঙ্গে ফেরিতে অধিকসংখ্যক যাত্রী উঠতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যাত্রী ও যানবাহনের শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ঘাট ও নৌপথে আমাদের টহল রয়েছে।’