বাউফলে দুর্নীতির মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ছয়জন কারাগারে

পটুয়াখালীর বাউফলের কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার
ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন ঘটনায় আলোচিত পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে (৬০) কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় তাঁর সঙ্গে আরও পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অন্য আসামিরা হলেন কনকদিয়া ইউপির সচিব মো. মজিবুর রহমান, সাবেক উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান, কনকদিয়া ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. নিজাম উদ্দিন হাওলাদার, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. আশরাফুল আলম ওরফে কামাল ও মেজবাহ উদ্দিন তালুকদার।

দুদকের মামলায় আজ রোববার পটুয়াখালীর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারসহ ছয় আসামি। আদালতের বিচারক জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ রোখসানা পারভীন শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে ছয় আসামিকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

শুনানিতে দুদকের আইনজীবী ছিলেন কে বি এম আরিফুল হক। আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. মজিবুর রহমান ওরফে টোটন ও মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদার।
ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের অক্টোবরে হতদরিদ্র ব্যক্তিদের মধ্যে ১০ টাকায় চাল বিক্রির কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে প্রথম আলোতে ‘বিত্তশালীরা পাচ্ছেন ১০ টাকার চাল, বঞ্চিত হতদরিদ্ররা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এরপর তদন্তে নামে দুদক। তারা সত্যতা পেয়ে শাহিন হাওলাদারকে প্রধান আসামি করে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও ছয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করে। ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি শাহিন হাওলাদার গ্রেপ্তার হন। ওই মামলায় একই বছরের ১৪ ডিসেম্বর আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মানিক লাল দাস।

দুদকের আইনজীবী কে বি এম আরিফুল হক বলেন, ইতিমধ্যে দায় স্বীকার করে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৪০৮ টাকা জমা দিয়েছেন শাহিন হাওলাদার ও অন্য আসামিরা।

এর আগে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর কনকদিয়া বাজারে মো. আনছার উদ্দিন (৪৯) নামের উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তাকে শাহিন হাওলাদার প্রকাশ্যে মারধর করেন। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনছার উদ্দিন মামলা করেন। ওই মামলায়ও শাহিন হাওলাদার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

চলতি বছরের ২৪ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুল হককে (৭০) কনকদিয়া বাজারে প্রকাশ্যে মারধর করে আবারও আলোচনার জন্ম দেন শাহিন হাওলাদার। ওই ঘটনায় ফজলুল হক আদালতে মামলা করেছেন।

সর্বশেষ চলতি বছরের ২৫ জুন এক তরুণ ও অষ্টম শ্রেণিতে পড়া ১৪ বছরের এক কিশোরীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সালিসে বসে শাহিন হাওলাদার নিজেই মেয়েটিকে বিয়ে করে বসেন। অবশ্য পরের দিনই ওই কিশোরী চেয়ারম্যানকে তালাক দেন। এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচিত হন শাহিন হাওলাদার।