বাল্যবিবাহ পণ্ড, বর-কাজিসহ তিনজন কারাগারে
করোনাকালে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই বিয়ের আয়োজন প্রায় শেষ। সাতসকালে বিয়ে বাড়িতে এসে হাজির বরযাত্রীরা। হাজির হয়েছিলেন কাজিও। ১০ বছরের শিশুকে কনে সাজানোর কাজও শেষ। বরযাত্রীদের জন্য চলছিল ভোজের আয়োজন। অপেক্ষা শুধু বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার। এত সব আয়োজন শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায় উপজেলা প্রশাসনের বাগড়ায়।
এ বাল্যবিবাহের আয়োজনে জড়িত থাকায় আটক করা হয় বর, কাজি, বরের ভগ্নিপতি, দুজন বরযাত্রী এবং মেয়েটির দুই অভিভাবককে। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে ওই সাতজনকে করা হয় জেল-জরিমানা। এ ঘটনা ঘটেছে আজ শুক্রবার সকালে বগুড়ার কাহালু উপজেলার পৌর এলাকার একটি গ্রামে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাছুদুর রহমান।
দণ্ডিত ব্যক্তিদের মধ্যে কাহালু পৌর এলাকার কাজী (ম্যারেজ রেজিস্ট্রার) আবদুল গফুরের (৪৬) ১০ মাস এবং বর নওগাঁ জেলার খয়রাবাত গ্রামের আবদুল মোমিন (২৭) ও শিশুটির ফুফা রফিকুল ইসলামের (৪৫) ছয় মাস করে কারাদণ্ড হয়েছে। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটির ফুফু খালেদা খাতুনকে চার হাজার টাকা এবং বরের ভগ্নিপতি জাহাঙ্গীর আলম, বরযাত্রী সেকেন্দার আলী ও আনিছুর রহমানকে ১৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এখন সারা দেশে কঠোর লকডাউন চলছে। সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশনা বলবৎ রয়েছে। এসবের তোয়াক্কা না করে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েটির বাল্যবিবাহ দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। বর নওগাঁ জেলার খয়রাবাত গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে আবদুল মোমিন। গোপনে মেয়েটির বিয়ের প্রস্তুতি চলে। আজ সাতসকালে বরযাত্রীরা এসে হাজির হন বিয়েবাড়িতে। খবর পেয়ে ইউএনও মাছুদুর রহমান পুলিশ নিয়ে বিয়েবাড়িতে হাজির হন। হাতেনাতে আটক করেন ওই সাতজনকে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা ঘোষণা করা হয়।
ইউএনও মাছুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এত অল্প বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না তাঁর বাবা-মা। কিন্তু ফুফু-ফুফা অনেকটা জোর করেই মেয়েটির বিবাহের সব আয়োজন প্রায় সম্পন্ন করেছিলেন। এ কারণে মেয়েটির বাবা-মাকে দণ্ড না করে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।