বিজিবির গুলিতে নিহত

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বনগাঁও সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যের গুলিতে কামাল মিয়া (৩৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। তিনি সদর উপজেলার ইসলামপুর উত্তরপাড়া গ্রামের আবদুল আউয়ালের ছেলে।

শনিবার দুপুরে কামাল মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিকেল চারটার দিকে তিনি মারা যান।

বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, কামাল মিয়া গরু চোরাচালানি দলের সদস্য। চোরাচালানি দলের সদস্যরা শনিবার দুপুরে ভারত থেকে ২৫-৩০টি গরুর চালান নিয়ে বনগাঁও পার্শ্ববর্তী সীমান্তের ১২১৫ নম্বর পিলারের কাছাকাছি আসার পর বনগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের দায়িত্বরত টহল দলের সদস্যরা তাদের আটকের চেষ্টা করেন। এ সময় ৩০-৩৫ জনের চোরাকারবারি দল বিজিবি সদস্যদের ওপর আক্রমণ করে। তখন কামাল দা দিয়ে বিজিবির ল্যান্স নায়েক থুই হলা মং মারমাকে আঘাত করেন। এতে তিনি হাতে ও মাথায় আঘাত পান। পরে তিনি আত্মরক্ষার্থে দুইটি গুলি করলে একটি গুলি কামালের পেছন দিকে লাগে। এতে তিনি আহত হন। আহত বিজিবি সদস্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নে আছেন।

কামাল মিয়ার আত্মীয় রাজীব আহমদ জানান, কামাল মিয়া পেশায় কৃষক। তিনি চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত নন। শনিবার দুপুরে তাঁর একটি গরু সীমান্ত অতিক্রম করে ওপারে চলে যায়। তিনি সেটি নিয়ে আসার সময় বিজিবি গরুটি ভারত থেকে আনা হয়েছে দাবি করে ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চায়। এ সময় গ্রামবাসীও বিজিবি সদস্যদের জানান গরুটি কামালের নিজের। কিন্তু বিজিবির এক সদস্য তখন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। তখন তর্কাতর্কির একপর্যায়ে বিজিবির ওই সদস্য কামালকে লক্ষ্য করে গুলি করলে সেটি তাঁর পেছন দিকে কোমরের নিচে লাগে। আহত কামালকে প্রথমে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সিলেটে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। বর্তমানে তাঁর লাশ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছে।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জে বিজিবির ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাকসুদুল আলম বলেছেন, ‘৩০-৩৫ জনের সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি দল বিজিবির টহল দলের ওপর হামলা চালায়। এতে বিজিবির এক সদস্য আহত হন। বিজিবি আত্মরক্ষার্থে দুটি গুলি ছোড়ে। এতে একজন আহত হন। পরে তিনি মারা গেছেন বলে শুনেছি। আমরা বিজিবি সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’